প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই জ্বালানি তেলের মূল্য এডজাস্টমেন্টে (সমন্বয়) যেতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তিনি আরও বলেন, মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা শতভাগ।
সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে এ কথা বলেন জয়।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা শতভাগ।
এশিয়ার অনান্য দেশ যেমন – নেপালে ডিজেল ১২৭ টাকা, ইন্দোনেশিয়া ১৩৮, সিঙ্গাপুর ১৮৯ টাকা, চীন ১১৮ টাকা, আরব আমিরাত ১২২.৮০ টাকা ও হংকং এ ২৬০ টাকা।
জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় জনগণের স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করে নাই। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই জ্বালানি তেলের মূল্য এডজাস্টমেন্টে যেতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন বিগত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। জ্বালানি তেল আমদানিতে সর্বশেষ জুলাই’ ২২ মাসের গড় প্লাটস রেট অনুযায়ী বিপিসির দৈনিক লোকসানের পরিমাণ-
ডিজেলে- প্রায় ৭৪,৯৪,৯২,৭০০.০০ টাকা
ও অকটেনে প্রায় ২,৯২,২৩,২১৬.০০
মোট- প্রায় ৭৭,৮৭,১৫,৯১৬.০০ টাকা।
সর্বশেষ মূল্য সমন্বয়ে ডিজেলের মূল্য ১১৪.০০ টাকা করা হলেও জুলাই/২০২২ মাসের গড় হিসেবে প্রতি লিটারে খরচ পড়বে ১২২.১৩ টাকা অর্থাৎ প্রতি লিটারে তারপরেও ৮.১৩ টাকা লোকসান বিপিসিকে বহন করতে হবে।
২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য রি-এডজাস্টমেন্ট করবে সরকার।’
গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে তেলের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। যা কার্যকর হয়, সেদিন রাত ১২টার পর থেকেই।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভেতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ডিজেল ১১৪ টাকা প্রতি লিটার, কেরোসিন ১১৪ টাকা প্রতি লিটার, অকটেন ১৩৫ টাকা প্রতি লিটার ও পেট্রোল ১৩০ টাকা প্রতি লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।
আগে ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ছিল লিটারে ডিজেল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা ও পেট্রোল ৮৬ টাকা।