সরকার পতনের একদফা আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে ড. ইউনূস ইস্যু সামনে আনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার শিকার বলে মনে করেন তিনি।
বুধবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পান্থপথে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ড. ইউনূসের ব্যাপারটা আমরা এভাবে দেখি, এখানে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার ব্যাপার রয়েছে। আরেকটা ব্যাপার আছে, এই মুহূর্তে এটাকে এত দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসা; ইটস আ ডাইভার্সন অব দ্য মেইন ইস্যু। আমাদের প্রধান যে ইস্যুটা, সরকার পরিবর্তন করতে হবে, পদত্যাগ করতে হবে। সেটা ডাইভার্ট করার জন্য এটাকে সামনে নিয়ে এসেছে সরকার।’
ইউনূসকে নিয়ে সরকারের ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে উনি (ইউনূস) প্রাধান্য পাচ্ছেন। অর্থাৎ তাদের যে লক্ষ্য ছিল যে, এটাকে ডাইভার্ট করবে, কিছুটা হলেও তারা সেটা পেরেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘সেই কারণে আমি মনে করি, ড. ইউনূসের ইস্যু কোনো বিচ্ছিন্ন ব্যাপার নয়। অধিকারের কর্মী আদিলুর রহমান, আগামীতে তার রায়ও হবে। আমি জানি না রায় কী আসবে, এটা বুঝতে পারি—তারা যেন সত্য কথা বলতে না পারে, তারা যেন মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলতে না পারে, সেই জন্য তাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্তের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে কথা বলার জন্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। এ রকম একটা রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্রে সত্য কথা বলার কোনো উপায় নেই, যে রাষ্ট্রে মানুষের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, যে রাষ্ট্রে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই, সেই রাষ্ট্র অবশ্যই ভেঙে পড়ছে।
অনতিবিলম্বে আমরা যদি এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে দেশকে রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে সরকার এবং জনপ্রতিনিধিদের দোষারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মূল কথা হচ্ছে সরকার এবং সিটি করপোরেশন দুটি ব্যর্থ হয়েছে ডেঙ্গু মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে। এরা প্রকৃতপক্ষে স্বাস্থ্য সেবা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। স্বাস্থ্য খাতে চরম অরাজকতা আমরা কোভিডের সময় দেখেছি—দেখেছি কী পরিমাণ দুর্নীতি এখানে হয়।
মশার ওষুধ কেনায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আবার সিটি করপোরেশনে এটা প্রমাণিত হলো, এডিস মশা ধ্বংসের নামে যে ওষুধ কেনা হলো সেখানেও ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, সেই ওষুধগুলো মধ্যে কোনো গুণই নেই! সেটা মশা নিধনে সাহায্য করছে না।
ঢাকার দুই মেয়রের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুই মেয়র জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। এ জন্য জনগণের কাছে তাদের যেহেতু দায়বদ্ধতা নেই, সেই কারণে তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন এই সমস্যা সমাধান করতে। কারণ তাদের তো এদিকে নজর নেই। তারা দুর্নীতি নিয়ে ব্যস্ত।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা মুন্সী বজলুল বাসিত আঞ্জু প্রমুখ।