শেখ হাসিনা কখনো রিজাইন (পদত্যাগ) করবেন না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আজ দেশ-বিদেশে কত চক্রান্ত, কত যড়যন্ত্রের খেলা হচ্ছে এ সরকারের পতনের জন্য। বিএনপি বিদেশি মুরব্বিদের ডাকছে। তাদের আবারো দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু আদালতের আদেশে এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে গেছে। ওটা আর হবে না।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় এ ছাত্রসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সেটা জেনে বিএনপি বিদেশি যড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তাদের (বিদেশি) দিয়ে ভিসানীতি ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’
তিনি বলেন, আমরা ১/১১ ভুলিনি। আর কোনো অস্বাভাবিক সরকার হবে না এ দেশে। এখন খেলা হবে ভোটচুরির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) ১০ ডিসেম্বর ক্ষমতায় আসবে দিবাস্বপ্ন দেখেছিল। শেখ হাসিনা নেই, পালিয়ে গেছে এমন দেখেছে। তাই অন্দোলন শুরু করে। সে আন্দোলন এখন গোলাপবাগে গিয়ে হেলে পড়েছে। গর্তে পড়ে গেলো। এখন তাদের পদযাত্রাও নেই; শুরু হয়েছে শোকযাত্রা। তাই কালো কাপড় পরে রাস্তায় নেমেছে।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন দেখে বিএনপির নেতাকর্মীরা অন্তর্জ্বালায় ভুগছে। তারা ভেবেছে পদ্মা সেতু ভেঙে যাবে। এখন সেতু দিয়ে মানুষ দুই ঘণ্টায় বাড়ি যাচ্ছে। তাই অন্তর্জ্বালায় জ্বলছে বিএনপি, জ্বলছে তারেক রহমান। কীভাবে হলো এ সেতু, মানতে পারছে না। এরপর ঢাকায় মেট্রোরেল হয়েছে, সেটা কে করেছে? শেখ হাসিনা, জ্বালা তো জ্বলবেই। তারা (বিএনপি) নিজে কিছুই করতে পারেনি, শেখ হাসিনা করছে সেটা তাদের কষ্ট।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এখন মানুষ কেন উন্নয়নে খুশি? এটাই তাদের দলের লোকদের কষ্ট। ব্যথার জ্বালায় জ্বলছে। শতভাগ বিদ্যুৎ হয়েছে এটা কষ্ট। তাদের সময় কথায় কথায় বিদ্যুৎ যেত, এখন থাকছে এটাই কষ্ট।
গত ৪৮ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা শেখ হাসিনা দাবি করে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর গত ৪৮ বছরে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা কে? শেখ হাসিনা। সবচেয়ে সৎ নেতা, সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসক, সবচেয়ে সফল কূটনৈতিক, সবচেয়ে সাহসী নেতা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা আছেন বলেই এ বাংলাদেশের মানুষ কখনো একা হয়নি। তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন বলে এ দেশে গণতন্ত্রের মুক্তি ঘটেছিল। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল। তিনি যদি বাংলায় না আসতো, সেটা কি হতো। বাংলার মানুষ এমন মুক্তির স্বপ্নে কখনো বিভোর হতে পারতো না। তার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে এ দেশে এটি বিশাল রূপান্তর হয়েছে। যার রূপকার শেখ হাসিনা।
আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে ছাত্রলীগকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকের এ তারণ্য নিয়ে যেতে হবে শেখ হাসিনার জয় পর্যন্ত। এবার মাতৃভূমি রক্ষায় খেলা হবে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে খেলা হবে, মুক্তিযুদ্ধ বাঁচাতে খেলা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আর বেশি সময় নেই। প্রস্তুত হয়ে যান। ছাত্ররাজনীতিকে আকর্ষণীয় করে আরও বেশি মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।
এর আগে সমাবেশে উপস্থিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে তিনি সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে যোগ দেন। এসময় তাকে স্বাগত জানান ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা মঞ্চে আসনগ্রহণ করেন।