সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের ভবিষ্যত জীবনের কথা বিবেচনা করে সার্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকাল দশটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এ পেনশন পদ্ধতি উদ্বোধন করেন। দেশের চার শ্রেণির প্রায় ১০ কোটি মানুষের জন্য চালু হলো সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবেছিলেন, তাই শোকের মাসেই চালু করা হলো এই স্কিম।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনটি স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। তৃনমুলের মানুষের আজ থেকে বৃদ্ধ বয়সে সুরক্ষা পাওয়ার পথ নিশ্চিত হলো।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পেনশন চালুর অঙ্গীকার করা হয়েছিলো। রোববার এ সংক্রান্ত বিধিমালা জারির করা হয়।
সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতে গত ২৪ জানুয়ারি সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস হয়। বিলে ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিকের নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পূর্তির পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করার বিধান রাখা হয়।
পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট চালু হয়েছে গতকাল বুধবার। ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.upension.gov.bd। ওয়েবসাইটের ঠিকানায় পেনশন স্কিমগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য উল্লেখ করা আছে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে চার ধরনের স্কিম চালু করা হয়েছে। এগুলোর নাম ‘প্রগতি’ ‘সুরক্ষা’, ‘সমতা’ ও ‘প্রবাসী’।
এর মধ্যে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি, স্ব-কর্মে নিযুক্ত লোকদের জন্য সুরক্ষা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাসী এবং দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সমতা প্রযোজ্য হবে।
পাস হওয়া ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ অনুসারে, ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিক নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পূর্তির পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদা দাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন।
এ ছাড়া বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও এই আইনের আওতায় নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা পরিশোধ করে পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন, সে বয়স থেকে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন। আজীবন বলতে পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে।