পাকিস্তানি পেসারদের তোপের মুখে ১৯৩ রানে আটকে গেল বাংলাদেশ। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। এরপর সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। কিন্তু এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার ছাড়া আর কেউই সুবিধা করতে পারেননি। ফলে দুইশর আগেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৮ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। যেখানে সর্বোচ্চ ৬৪ রান এসেছে মুশফিক ব্যাট থেকে। তাছাড়া অর্ধশতক পেয়েছেন সাকিবও।
শুরুতেই শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফদের তোপে ৪৭ রান তুলতেই চলে গিয়েছিল ৪ উইকেট। এরপর প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে বাংলাদেশকে লড়াকু পুঁজি গড়ার পথ করে দিয়েছিলেন সাকিব-মুশফিক যুগল। কিন্তু বাকিরা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিলেন। বড় শট খেলতে গিয়ে একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসলেন তারা। ফলে ঘুরে দাঁড়ানোর পরও ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানেই গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশের ইনিংস।
ইনিংসের শুরুতেশাহিন আফ্রিদির দুর্দান্ত ওভারে কোন রান পাননি ওপেনার নাঈম শেখ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে দলীয় রানের খাতা না খুললেও উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নাসিম শাহর প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরে আফগানদের সাথে শতক হাঁকানো ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
উইকেটে এসেই দারুণ এক বাউন্ডারিতে শুরু করেছিলেন লিটন দাস। আগ্রাসী ব্যাট চালানোর চেষ্টা করলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। পঞ্চম ওভারে আফ্রিদির বলে ১৩ বলে ১৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
গোল্ডেন ডাক খেয়ে মিরাজের ফেরার পরও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন নাঈম শেখ। শুরুতে একটু শেইকি মনে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছিলেন। খেলেছেন দারুণ কিছু শটও। কিন্তু আরও একবার ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না। হাঁটলেন মিরাজ-লিটনের পথেই। অষ্টম ওভারে দলীয় ৪৫ রানের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন রউফ। ২৫ বলে ২০ রান আসে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে।
এশিয়া কাপের আগেও ফর্মের তুঙ্গে থাকা তৌহিদ হৃদয় এশিয়া কাপে এসে গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি। সুপার ফোরে এসেও ব্যর্থ তিনি। ৪৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছে তখন উইকেটে আসলেও ২ রানের বেশি করতে পারেননি টপ অর্ডারের এই ব্যাটার। পাকিস্তানি পেসারদের তোপে দলীয় অর্ধশতকের আগেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে দলের হাল ধরেছেন সাকিব-মুশফিক। এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের পঞ্চম উইকেটে একশ রানের জুটিতে স্বস্তি ফেরে টাইগার শিবিরে। তবে ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরির পর আর বেশি দূর এগোতে পারলেন না। ৩০তম ওভারের প্রথম বলে ফাহিম আশরাফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭ বলে ৫৩ রান।
সাকিবের পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুশফিকও। মাইলফলক ছুঁতে ৭১ বল খেলেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। এরপর ইনিংস বড় করার দৌঁড়ে এগিয়ে থাকেন মুশফিক।
ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দিয়ে সাত নম্বরে পাঠানো হয়েছিল শামীম হোসেনকে। সেটার প্রমাণও দিলেন উইকেটে এসেই। ৩৪তম ওভারে আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালোই শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরের ওভারেই রীতিমতো নিজেকে বিসর্জন দিলেন এই ব্যাটার। ইফতিখারকে টেনে লেগ সাইডে মারতে গিয়ে টপ এজড হয়ে ধরা পড়েন। তাতে ২৩ বলে ১৬ রানে থামেন তিনি।
পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে সাকিব যখন সাজঘরে ফেরেন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৪৭ রান। সেখান থেকে আর ৪৩ রান যোগ করতেই পরের ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩৮তম ওভারে রউফের টানা দুই বলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক ও তাসকিন আহমেদ।
শেষ ৩ রান তুলতেই লেজের সারির ৪ ব্যাটারকে হারায় বাংলাদেশ। তাতে ১৮৯ রানে ৬ উইকেট থেকে ১৯৩ রান তুলতেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে ১৯ রানে ৪ উইকেট শিকার করে দিনের সেরা বোলার রউফ। তাছাড়া আফ্রিদির ঝুলিতে গেছে ৩ উইকেট।