মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতারা।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো শোক বাণীতে এবং প্রবীণ এই রাজনীতিবিদকে শেষ বিদায় জানাতে এসে দুঃখ প্রকাশ করে বিভিন্ন বক্তব্য রাখেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে বলেও মনে করেন দেশের শীর্ষনেতারা।
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রয়াত সাজেদা চৌধুরীর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় সংসদের দীর্ঘতম সময়ের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে এমন একজন বর্ণাঢ্য সংগ্রামীর জীবনাবসান ঘটেছে, যিনি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর এবং ১৯৭৫ সালের পর আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে অকুতোভয় নেত্রী।
শোক প্রকাশ করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অনন্য ভূমিকা জাতি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে। তার মৃত্যুতে কেবল আওয়ামী লীগ নয়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো তা অপূরণীয়।
গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আমরা হারিয়েছি একজন দেশপ্রেমী বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম) এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীরপ্রতিক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
শোকবার্তায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা এবং পঁচাত্তরে ঘাতকের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর দৃঢ়তার কথা জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে।
রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে আওয়ামী লীগ ছেড়ে আসার পরও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সম্পর্কে সাজেদা চৌধুরীর মন্তব্যে–‘কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ ছেড়েছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছাড়েননি’ এর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এমন রাজনীতিক বর্তমান সময়ে বিরল।
১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। ১৯৫৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৯-১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।