সারাদেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও রাহাজানির বিরুদ্ধে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করেন।এ সময় তারা ‘ধর্ষকের যৌনাঙ্গ, কেটে দাও ফেলে দাও’, ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে, লড়াই হবে একসাথে’, ‘চব্বিশের বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই নাই’, ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে‚ লড়ায় হবে একসাথে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভে গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হান্নান রহিম বলেন, “ধর্ষণ, ছিনতাই কিংবা চাঁদাবাজির শিকার যে কেউ হতে পারে। সবাইকে মাঠে নামতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলছি, আপনি কি আমাদের সাথে মশকরা করছেন? প্রতিনিয়ত দেশে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ঘটছে, অথচ আপনি এগুলো মোকাবিলা করতে পারছেন না। আপনি যদি না পারেন, তবে পদত্যাগ করুন, আমরা নতুন নেতৃত্ব চাই। যত দ্রুত সম্ভব ধর্ষণের বিচার হতে হবে এবং জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে, যাতে কেউ ধর্ষণের কথা ভাবতেও না পারে।”
মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পাবেল রানা বলেন, “গত ১০-১৫ দিনে ১৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু একটি ঘটনারও দৃশ্যমান বিচার হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষের কাছে আমাদের স্পষ্ট বার্তা—আপনারা যদি দেশ পরিচালনা করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। ধর্ষকরা অপরাধ করে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াবে, তা হতে পারে না। ধর্ষণের সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসি করতে হবে এবং যেখানে ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছে, সেখানেই সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করতে হবে। আজ কেউ নিরাপদ নয়—রাস্তা, বাস, বাড়ি কোথাও নিরাপত্তা নেই। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে রক্ত দিয়েছি, কিন্তু প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে তা দেখতে পাচ্ছি না। প্রশাসন যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারে, তাহলে আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।”
এ সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিয়ান বলেন, “অন্তবর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ করছে, কিন্তু ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন নেই। এজন্যই ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। আইন সংস্কার কমিটির কাছে আমাদের দাবি, ধর্ষণের শাস্তি জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ এই অপরাধের চিন্তাও না করে। ধর্ষণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ পর্নোগ্রাফি। সরকারকে অনুরোধ করবো, পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”প্রসঙ্গত, সারাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি, অবিলম্বে ধর্ষণ, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।