বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সরকার বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সরকার ধরা পড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে সবাই হাসছে।
সম্প্রতি লন্ডনে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘একমাত্র আওয়ামী লীগই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করে’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের জবাবে এই মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে যে নির্বাচন হয় সেই নির্বাচন নাকি সবচেয়ে সুন্দর সুষ্ঠু হয়। তার এই কথা শুনে ঘোড়াও হাসবে। দেশের প্রতিটি মানুষ জানে আমাদের আবদুস সালামের ভাষায় সবচেয়ে ভুয়া এই কথা। সারা বাংলাদেশে একটাই স্লোগান উঠবে শেখ হাসিনা ভুয়া। ’
তিনি বলেন, ‘আসলে হাসিনা আজকে নাই। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। আজকে কথা নয়, সময় হচ্ছে কাজের। সমস্ত দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এ সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে, তারা আজকে আমাদের সমস্ত অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যে কারণে যুদ্ধ করেছিলাম সে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানুষের মানবাধিকার নেই। আজকে মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করছে, আজকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করছে, বিদেশে ঘরবাড়ি তৈরি করছে। আর আমাদের মানুষদের তারা হত্যা করছে। ’
মঙ্গলবার খিলগাঁও জোড় পুকুর পাড় মাঠের সামনে খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানার উদ্যোগে জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধানকে হত্যা, পল্লবীসহ সারা দেশে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে অংশ নিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।
সমাবেশের সময় নির্ধারিত ছিল ৩টা। কিন্তু দুপুর ১২টা থেকে তিন থানার নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হন। দুপুর ২টার মধ্যে সমাবেশস্থলসহ আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মীরা জড়ো হন।
সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সেলিমা রহমানকে আঘাত করে, বরকত উল্লাহ বুলুকে হত্যার জন্য আঘাত করে, তাবিথ আউয়ালকে হত্যার জন্য আঘাত করে, ভেলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধানকে হত্যা করে এই দেশের আন্দোলনকে দমন করে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। আজকেও তারা জেগে উঠছে। ’
তিনি বলেন, ‘পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে সবার গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন করতে হবে। নতুন পার্লামেন্ট হওয়ার পর সরকার গঠন হবে। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই। সব রাজনৈতিক দল ও সব মানুষকে এক করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই এবং দুর্বার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই হাসিনার সরকারের পতন ঘটিয়ে আমরা জনগণের সরকার গঠন করব। ’
বিএনপি মহাসচিব নিজেই স্লোগান ধরেন ‘দাবি এক দফা এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘ফয়সালা হবে কোন পথে, রাজপথে রাজপথে’ ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’।
সভা-সমাবেশে প্রশাসন অনুমতি দিতে গড়িমসি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এ দেশ কারো বাবার রাজত্ব নয়। এই দেশের মানুষের রক্তে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আমি তাদের পরিষ্কার বলতে চাই, এ সরকারই শেষ সরকার নয়। এরপরও সরকার কিন্তু থাকবে। আপনাদের ছবিও প্রিন্ট করা আছে, ভিডিও করা আছে, রেকর্ড করা আছে। ’