সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এরপরই আজ সকালে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে চেপে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশটির শাসক প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদ। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ শাসনের সমাপ্তি ঘটেছে বলে সিরিয়ান কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন দেশটির সেনা কমান্ডার।
বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত সিরিয়ার একজন কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ভাষ্য, সিরিয়া এখন আসাদ থেকে মুক্ত।
এর আগে সিরিয়ার দুইজন সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, আসাদ প্লেনে করে দামেস্ক ছেড়েছেন। তবে তিনি ঠিক কোথায় গেছেন- সেই সম্পর্কে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
ফ্লাইটরাডার ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে সিরিয়ার একটি বিমান উড্ডয়ন করেছে। এরপর বিমানটি সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে যায়। তবে আচমকা বিমানটি ইউ-টার্ন নিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য উল্টো দিকে উড়ে যায় এবং ম্যাপ থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
বিমানটিতে কারা ছিলেন তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সিরিয়ার বিরোধীরা বলছেন, আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তারা আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা দিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে সশস্ত্র বিরোধীরা বলেছেন, স্বেচ্ছাচারী শাসক আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমরা দামেস্ককে বাশার আল-আসাদ থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি।
বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দামেস্কে প্রবেশ করছেন বিদ্রোহীরা। বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, আমাদের সেনারা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দামেস্কের প্রধান স্কয়ারে হাজার হাজার লোক গাড়িতে করে এবং পায়ে হেঁটে এসেছেন। তারা হাত নাড়ছেন এবং স্বাধীনতা বলে স্লোগান দিচ্ছেন।
বিদ্রোহীরা বলছেন, আমরা সিরিয়ার জনগণের সঙ্গে আমাদের বন্দীদের মুক্ত ও তাদের শিকল ভাঙ্গার এবং সেদনায়া কারাগারে অবিচারের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করার সংবাদ উদযাপন করছি।
এদিকে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতা আবু মোহাম্মদ আল–জাওলানি হোমস দখলের ঘটনাটি এক ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং তার গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের অহেতুক রক্তপাতে না জড়ানোর এবং ‘যারা অস্ত্রত্যাগ করেছে’, তাদেরকে কোনো ধরনের আঘাত না দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বিদ্রোহীরা কারাগার থেকে লাখো বন্দীকে মুক্তি দেয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত পালিয়ে যায় এবং যাওয়ার আগে তারা সব নথি আগুনে পুড়িয়েছে বলে জানা গেছে।
২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন বাশার আল-আসাদ। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন।