সাভারের আশুলিয়ায় নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন
ছোট পর্দার অভিনেতা আজিজুর রহমান আজাদ। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই রাতের হামলার বিষয়ে কথা বলেছেন এ অভিনেতা। যেখানে তিনি বলেছেন, মা আর ওয়াইফকে যেন গুলি করতে না পারে, দৌড়ে গিয়ে ওর হাত ধরি।
আজাদ বলেন, ‘রান্না ঘরের দিকে যাওয়ার সময় শব্দ শুনতে পাই, যেন দরজায় কেউ ঠকঠক করছে। রান্নাঘরের সামনে দাঁড়ানোর পর বুঝতে পারি, কেউ ভেতরে আছে। দরজা খুলতেই দেখি, দুইজন পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে আছে।’
‘তারপর ভাবলাম, দরজা লাগিয়ে দিই। খেয়াল করলাম, পিস্তল তাক করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গুলি করতে পারে বা কিছু একটা। এটা বুঝতে পেরে, মা আর ওয়াইফ যেহেতু সঙ্গে, এটা সিদ্ধান্ত নিই, যে করে হোক ডাকাতদের থামাতে হবে, যাতে গুলি করতে না পারে। তখনই দৌড় দিয়ে একজনের হাত ধরে ফেলি। আরেকজনকে ধাক্কা দিই। যেন গুলি করতে না পারে। এরপর ধস্তাধস্তি হয়।’
তার ভাষ্য, ‘আমার মা আর স্ত্রী আরেকজনকে ধরে, যাতে আমাকে গুলি করতে না পারে। আমি যাকে ধরেছি, তার এক হাতে পিস্তল, আরেক হাতে স্ক্রুড্রাইভার ছিল। তখন সেই ডাকাত স্ক্রুড্রাইভার দিয়ে আমাকে আঘাত করতে থাকে। এতে আমার হাতে ও মাথায় আঘাত লাগে। ধস্তাধস্তির মধ্যে আমাকে জোরে ধাক্কা দেয়।’
‘ওই ধাক্কায় আমি দূরে সরে যাই। এরপর গুলি করে, যা আমার ডান পায়ে লাগে। তখন ভাবতে থাকলাম, আবার তো গুলি করবে। এ–ও ভাবি, আমাকে না হলে গুলি করেছে, কোনোভাবেই যেন আমার মা আর ওয়াইফকে যেন গুলি করতে না পারে। আমি দৌড়ে গিয়ে আবার ওর হাত ধরি। কয়েক মিনিট ধস্তাধস্তি হয়।’
ডাকাতদের হামলার কথা উল্লেখ করে আজাদ বলেন, ‘আমার খুব ব্লিডিং হচ্ছিল। ডান পায়ে ভর রাখতে পারছিলাম না। এটা ডাকাতও বুঝতে পেরেছে। এরপর আবার আমাকে ধাক্কা দেয়, পড়ে যাই। ওই সময় আরেকটা গুলি করে, যা আমার বাঁ পায়ে হাঁটুর ওপরে লাগে। তারপরও আবার চেষ্টা করি ধরার।’
‘এর মধ্যে আরেকজনকে আমার ওয়াইফ ফ্রাই প্যান দিয়ে মাথায় আঘাত করে। সেই ডাকাত আরেকটা ফ্রাই প্যান দিয়ে আমার স্ত্রীকেও প্রচণ্ড জোরে আঘাত করে। এরপর সে পড়ে যায়। সেই ডাকাতকে ধরতে গেলে তখন আমাকে আরেকটা গুলি করে, হাঁটুর ওপরে।’
শেষে বলেন, ‘তিনটা গুলি লাগার পর আমি আর ব্যালান্স রাখতে পারছিলাম না। তারপরও ভর দিয়ে দাঁড়াই। ওই মুহূর্তে ওরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। জানালা কেটে যেদিক দিয়ে আসছিল, সেদিক দিয়ে দৌড়ে পালায়। আমরা চিৎকার–চেঁচামেচি করতে থাকি। পাশের বিল্ডিংয়ের মানুষেরাও শব্দ শুনে ছুটে আসে। মাত্রাতিরিক্ত ব্লিডিংয়ের কারণে লুঙ্গি দিয়ে বেঁধে নিই। আমার স্ত্রীরও ব্লিডিং হচ্ছিল।’