গণতন্ত্রের প্রশ্নে বাংলাদেশের জনগণ ভারতের অবস্থান জানতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, স্বামী-স্ত্রী ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিন্তু এক নয়। সুতরাং আমরাও তো ভারতের সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই।
সোমবার (১৯ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। গত ১৪ মে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামে ‘ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে ছাত্রলীগ যুবলীগের সন্ত্রাসীদের নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার’-এর প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপুর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শিরীন সুলতানা প্রমুখ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বন্ধুত্ব চাই। একটা রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটা রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব থাকবে। কিন্তু এই সরকার তো বন্ধুত্বে বিশ্বাস করে না। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলে দিয়েছেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব স্বামী-স্ত্রীর মতো। স্বামী-স্ত্রী ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিন্তু এক নয়। সুতরাং আমরাও তো ভারতের সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব আমাদের দরকার, ঝগড়াঝাটি আমাদের চলে না।
তিনি বলেন, আমাদের যদি প্রভুত্ব বা স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা দেয়, সেই বন্ধুত্ব তো কাম্য নয়। সে কারণে আমি বলবো, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাসহ এখানে যারা আছেন, তারা দিল্লিতে খবর পাঠান, জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে শিখুন। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, তার পাশে বাংলাদেশ গণতন্ত্রবিহীন। যার জন্য এদেশের জনগণ ভারতকে দায়ী করে- এ কথা স্পষ্ট করে বলে দিলাম।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আপনাদের ভারত সরকার, ভারতের রাজনীতিবিদদের বলেন, বন্ধুত্ব কি শুধু শেখ হাসিনার সঙ্গে করবেন, বন্ধুত্ব কি শুধু আওয়ামী লীগের সঙ্গে করবেন; নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের সঙ্গে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সঙ্গে যদি ভারতের বন্ধুত্ব হয়, সেটা হলো প্রকৃত বন্ধুত্ব, সেটা মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই হবে। নতুবা একজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে কোনও লাভ হবে না।
সুতরাং আপনাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে-এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সঠিক তথ্য আপনাদের জানাতে হবে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনারা আমাদের নির্বাচনে পাস করিয়ে দেবেন তা নয়; গণতন্ত্রের প্রশ্নে সুস্পষ্ট অবস্থান নেবেন কিনা— তা বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়।