রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ব্যবসায়ীকে যুবদল নেতা কর্তৃক নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং দেশব্যাপী অব্যাহত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই বিক্ষোভ মিছিল পালিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত গুঁড়িয়ে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মিডফোর্ডে খুন কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, তারেক রহমান জবাব দে’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এবিষয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফ ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে সর্বত্র সংস্কার হবে। কিন্তু বাস্তবে সংস্কারের নামে চলছে নাটক। দেশের প্রশাসন ও থানা ব্যবস্থায় যাঁরা আগে ছিলেন, এখনও তারাই রয়েছেন। প্রশাসন স্থির না থাকায় সন্ত্রাসীরা মনে করছে, তারা ক্ষমতায়। ফলে আগের মতোই সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে আইনের শাসন থাকবে, মানুষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ভয় করবে ও শ্রদ্ধা করবে। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখতে পারছি পাথর নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে—এটা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই এবং ধিক্কার জানাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও আইন উপদেষ্টার প্রতি।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোয়াইব হোসেন আল-আমিন বলেন, ‘আমরা কখনো এই দেশকে চাঁদাবাজের হাতে তুলে দিতে পারবো না। বিএনপি যদি এখন থেকে এই চাঁদাবাজদের থামাতে না পারে তবে বাংলার তরুণ সমাজ এদের সম্মুখ জবাব দিবে। আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচারকে দূর করেছি যাতে এই অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি না হয়। এখন তারা যদি এর পুনরাবৃত্তি করে তাহলে বাংলাদেশের জনগণ স্বৈরাচারী হাসিনার মতো তাদেরকেও জবাব দিবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগর শাখার সদস্য সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘একজন ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যারা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তারা স্পষ্টভাবে হাসিনার পথেই হাঁটছে। ৫ আগস্টের পর সংস্কারের কথা বলা হলেও বাস্তবে প্রশাসন ও আইনে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই যারা ক্ষমতার স্বাদ নিতে শুরু করেছে, জনগণ আর কখনো তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে না।’
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই রাজধানীর মিটফোর্ডে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এক ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে আঘাত করে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়।