হিন্দি সিনেমা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অস্ত্র কেনেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডাক্তারের পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। রিমান্ড শেষে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান ভারতের বিভিন্ন হিন্দি সিনেমা দেখেই মূলত নিজের কাছে এমন অস্ত্র রাখার পরিকল্পনা আসে তার মাথায়। আর শখের বশেই অস্ত্র-গুলি ও চাকু কিনে সংগ্রহ করতেন তিনি।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেলে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার পরিদর্শক জুলহাজ উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই শিক্ষককে বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, একজন শিক্ষক হয়েও রায়হান শরীফ কেন অস্ত্র-গুলি নিজের সংগ্রহে রাখতে গেলেন, তার প্রকৃত কারণ বের করার চেষ্টা করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান শরীফ জানিয়েছেন, ভারতের বিভিন্ন হিন্দি সিনেমা দেখেই মূলত নিজের কাছে এমন অস্ত্র রাখার পরিকল্পনা করতে শুরু করেন তিনি।
জুলহাজ উদ্দীন আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই রায়হান অস্ত্রের ব্যাপারে খোঁজ নেন। তবে উপযুক্ত সোর্স না পাওয়ায় তার পরিকল্পনা সফল করতে একটু সময় লেগে যায়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাজশাহী শহরে তার পূর্বপরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এলাকায় এক অস্ত্র কারবারির সঙ্গে পরিচয় হয়। রায়হান নিজেই কুষ্টিয়ায় গিয়ে প্রথমে একটি অস্ত্র কেনেন।
এরপর গত ডিসেম্বরে আবার কুষ্টিয়া গিয়ে ওই একই ব্যক্তির কাছ থেকে আরেকটি অস্ত্র কেনেন। সেখান থেকে তিনি গুলিও কেনেন। তিনি অনলাইনে ছবি দেখে বিদেশি চাকু সংগ্রহ শুরু করেন। শখের বশে অস্ত্র, গুলি ও চাকু কিনে সংগ্রহ করতেন রায়হান শরীফ। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আরও কিছু অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা ছিল তার। অস্ত্র ব্যবহার করে অবৈধ কোনো কাজ করার ছক রায়হানের ছিল কি না, এমন কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এখন পর্যন্ত রায়হানের কাছে অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে একজনের নাম পাওয়া গেছে। এই চক্রের আরও কেউ রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্লু পেয়েছি। যেখান থেকে রায়হান শরীফ অস্ত্র কিনেছিলেন, সেই ব্যক্তি পেশাদার অস্ত্র কারবারি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ বিকেলে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় তাকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেয় পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।