বগুড়া- ৪ আসনের উপনির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের নির্বাচন নিয়ে অভিযোগের ভিত্তি নেই বলে উড়িয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। তিনি বলেন, হিরো আলম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উনার অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তার অভিযোগ আমলে নিয়ে সকাল থেকে আমরা ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার(ইসি) রাশেদা সুলতানা এসব কথা বলেন।
জেলা নির্বাচন অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছি জানিয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এ ধরনের কোনো বিষয় তাদের কাছে নেই। তাদের রেজাল্ট শতভাগ সঠিক।
বিএনপির পদত্যাগে সৃষ্টি হওয়া শূন্য ৬ আসনে গত বুধবার ভোট হয়। বগুড়া-৪ ও ৬ আসনে একতারা প্রতীক নিয়ে হিরো আলম ভোটে অংশ নেন। ভোট শেষে হিরো আলম অভিযোগ করেন বগুড়া-৪ আসনে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানো হয়েছে।
ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে হিরো আলম বলেন, ‘ভোট চুরি হয়নি, ফলাফল ছিনতাই হয়েছে। ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে যাব।’
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের কাছে যে রেজাল্ট শিটগুলো আসছে, সেখানে কোথাও কোনো ব্যত্যয় নাই।’
ভোটের ফলাফল ঘিরে হিরো আলমের অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘একজন প্রার্থী যখন হেরে যায়, আমাদের দেশের সংস্কৃতিটা কিন্তু এ রকমই। হেরে গেলে প্রশ্নবিদ্ধ করার নানা ধরনের প্রবণতা কিন্তু আছে আমাদের দেশে। এটা শুধু হিরো আলম সাহেব নয়, আমরা যতগুলো ইলেকশন করলাম, সব জায়গাতে এ ধরনের প্রবণতা আমার লক্ষ্য করেছি।’
এজেন্টের হাতে ফলাফল দেওয়া হয়নি— এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি। নন্দীগ্রামে খুব একটা এজেন্ট দেন নাই। ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন আমি আর এসপি অনেকগুলো কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। আমরা ওখানে গিয়ে উনার (হিরো আলমের) এজেন্ট পাইনি।’
কাহালু উপজেলায় হিরো আলমের কিছু এজেন্ট ছিল জানিয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘কাহালু উনার নিজের এলাকা। এজেন্ট ছিল না। অন্য প্রার্থীর কিন্তু এ ধরনের অভিযোগ নাই। উনি হেরে গেছেন তাই এ ধরনের অভিযোগ করছেন। উনি বরাবরই বলেছেন ভোট ভালো হয়েছে। উনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন হেরে গেলেও ফলাফল মেনে নেব। হেরে গেছে কষ্ট হয়েছে। কষ্ট উনি নানাভাবে প্রকাশ করছেন। এটা উনি করতে পারেন। একজন মানুষ বললে তো হয় না। প্রমাণতো থাকতে হবে।’
হিরো আলমের আসনের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল ওয়েবসাইটে দেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়ই দেব। আমাদের ওয়েবসাইটে দিতে সমস্যা কোথায়? ফলাফল এখনো হয়নি। যেটা পেয়েছি, সেটা তো বেসরকারি। আসার পরে দিয়ে দেব।’
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান হিরো আলম।
এ বিষয়ে হিরো আলম আদালতে গেলে অসুবিধা নাই জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘অভিযোগ দেওয়া আর অভিযোগ এস্টাবলিশ করা দুটোর মধ্যে অনেক তফাৎ।’
ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘কোনো প্রার্থী কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। নির্বাচনের পূর্বের প্রস্তুতি সন্তোষজনক ছিল। ভোটের দিন ভোটের ভেতরে কোনো অনিয়ম হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া দু-একটা দেখতে পেরেছি। তবে ভেতরে ভোট ডাকাতি-ইভিএম নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। পুরোপুরি ভোটটা সন্তোষজনক হয়েছে।’