মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে উত্তাপ ছড়াল ইয়েমেন থেকে ইসরায়েল অভিমুখে ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রোববার ইয়েমেনভিত্তিক ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা তাদের বিরুদ্ধে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। যদিও হামলার ফলে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবুও ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
আইডিএফ জানায়, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবেলায় সক্রিয় করা হয় ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ‘ইন্টারসেপ্টর’ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। তবে হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি বাহিনীটি।
হামলার সময় ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চল, জেরুজালেম এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশে হঠাৎ করেই আকাশ পথে হামলার সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। এএফপি-র প্রতিবেদনে বলা হয়, জেরুজালেমে কর্মরত তাদের প্রতিনিধিরা সাইরেন ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাইরেন বাজানো হয় মূলত নাগরিকদের সতর্ক করার জন্য। কিছু সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বাসিন্দারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে চলমান দ্বন্দ্বের আরও বিস্তৃত পরিণতির ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশেষ করে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে এ ধরনের আক্রমণ বাড়িয়ে তুলছে হুতি বিদ্রোহীরা।
গাজায় ইসরায়েল ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে অভিযান শুরু করার পর থেকে ইয়েমেনের হুতিরা ২০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু ইসরায়েল নয়, এর আগে তারা লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতেও একাধিকবার হামলা চালিয়েছে।
এদিকে, সম্প্রতি সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা এক বৈঠকে হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও তাদের পেছনে থাকা ইরানের হুমকি নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতে আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মধ্যকার উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়।