হেফাজতের নায়েবে আমীর ও গাজীপুরের দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর মাদ্রাসার নিবন্ধন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে কওমি মাদ্রাসার মানোন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি পাঠানোয় তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আজ রবিবার কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর খাস কমিটির এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকেও তার এ চিঠির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করা হয়।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সহ সভাপতি ও আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআ’তিল কওমিয়ার সদস্য মাওলানা মুছলেহ উদ্দিন গহরপুরী এক গণমাধ্যমে বলেন, বেফাকের সংবিধান অনুয়ায়ী শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে গতকাল খাস কমিটির মিটিংয়ে ‘মাদ্রাসা দাওয়াতুল হক দেওনা কাপাসিয়া গাজীপুর’ মাদ্রাসার নিবন্ধন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত ১০ আগস্টের বৈঠক স্থগিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপসচিব শামীম হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুধবার সকালে অনুষ্ঠেয় সভাটি অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে অপারগতা জানায় কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত কর্তৃপক্ষ আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআ’তিল কওমিয়া বাংলাদেশ।
বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, হেফাজতে ইসলামের সহসভাপতি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর পাঠানো চিঠি একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। এর সঙ্গে হাইয়াতুল উলয়া বা সংশ্লিষ্ট ছয় বোর্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাছাড়া হেফাজতের ওই নায়েবে আমির হাইয়াতুল উলয়ার কেউ নন।
এ ছাড়া শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহহিয়া ও মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান জানিয়েছেন, দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর চিঠির সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। সংগঠন তার চিঠির সঙ্গে একমতও নয় বলেও জানানো হয় এতে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি দেন হেফাজতের নেতা ও গাজীপুরের দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। ‘কওমি ধারার দ্বীনি শিক্ষা ও শিক্ষকের মানোন্নয়নকল্পে সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ’ শীর্ষক চিঠিতে মিজানুর রহমান আটটি সুপারিশ করেন।
এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কওমি মাদ্রাসার বোর্ডপ্রধানদের একটি বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। এর পরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় কওমি আলেমদের মধ্যে।