ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছেন, ১২ ঘণ্টার মধ্যে গাজা দখলের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন তারা। রোববার (৮ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে আইডিএফের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র লেফটেনেন্ট কর্নেল রিচার্ড হেকট একথা জানান।
আইডিএফ জানান, এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা দখল করা এবং এটির উপর নিজেদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা।
শনিবার ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে গাজাভিত্তিক স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস অতর্কিত হামলা চালিয়ে শত শত ইসরায়েলিকে হত্যার পর গাজা দখলের হুমকি দিয়েছে তেল আবিব।
এ ব্যাপারে এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আমরা এখন ভাবছি সেটি হলো গাজার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা। আগামী ১২ ঘণ্টায় আমাদের লক্ষ্য হলো: গাজার পতন ঘটানো, পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং আমাদের অঞ্চলে থাকা সব সন্ত্রাসীকে হত্যা করা।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা খুব সম্ভবত গাজার কিছু কমিউনিটিকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করব। আর সময় গড়ানোর সঙ্গে গাজার কিছু নির্দিষ্ট এলাকা থেকে মানুষদের উচ্ছেদ করব।’
শনিবার ভোরের দিকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আকস্মিকভাবে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। এরপর হামাসের শত শত যোদ্ধা স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলায় ইসরায়েলিদের প্রাণহানির সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা হামাসের এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও দুই হাজারের বেশি ইসরায়েলি।
এদিকে ২০০৫ সালে গাজা উপত্যকা থেকে নিজেদের সব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ইসরায়েল। ২০০৩ সালে ইসরায়েল অবৈধ বসতিস্থাপনকারীসহ সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ২০০৭ সালে ফিলিস্তিন অথিরিটির সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হামাস।
হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ দখল করার পরই সেখানে অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। সেই অবরোধের পর দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে অবরুদ্ধ হয়েই আছেন গাজার বাসিন্দারা। আর অবরুদ্ধ থাকার কারণে সেখানকার চারভাগের তিনভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন।
যদি ইসরায়েল আবারও গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় তাহলে সেখানে বড় ধরনের স্থল অভিযান চালাতে হবে তাদের। আর বর্তমানে ইসরায়েল যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে গাজায় বিমান হামলা ছাড়াও সরাসরি সেনা পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।