অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, দেশের জনগণ এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং দীর্ঘ ১৭ বছর পর ইতিহাসে স্মরণীয় একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বুধবার (১১ জুন) লন্ডনের চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ঘোষিত সময়টিই নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। আশা করছি, এবার এমন একটি নির্বাচন হবে, যেটা দেশের মানুষ বহু বছর ধরে প্রত্যাশা করেছে।
তিনি আরও জানান, আগামী জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে, যেখানে নির্বাচনের নীতিমালা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা থাকবে।
সংলাপে নিজের সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন তিনি। বিশেষ করে সরকারি সেবায় অনলাইন পদ্ধতির প্রসার নিয়ে তিনি বলেন, আগে পাসপোর্টসহ যেকোনো সরকারি কাজের জন্য ‘মাধ্যম’ খুঁজতে হতো। সেটাই দুর্নীতির সুযোগ তৈরি করত। এখন অনেক কিছুই ডিজিটাল হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ হয়রানি ছাড়াই সেবা পাচ্ছে।
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, সাত বছর আগে যারা শিশু হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিল, তারা এখন কিশোর-তরুণ। কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দাতা সংস্থা আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ায় সংকট আরও বাড়ছে।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে এবং এর টেকসই সমাধানের উপায় খোঁজা হচ্ছে।
সংলাপে উপস্থিত এক অংশগ্রহণকারী জানতে চান, নির্বাচনের পর তিনি কোনো ভূমিকায় থাকবেন কি না। জবাবে ড. ইউনূস সাফ জানান, নির্বাচনের পর আমি আর কোনো দায়িত্বে থাকতে চাই না।
তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আয়োজন করা। সকল রাজনৈতিক দল এতে অংশ নেবে বলে আমরা আশা করছি।
নারীর অধিকার ও অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীদের ক্ষমতায়ন ছাড়া সমাজের সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। অন্তর্বর্তী সরকার নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে।