- কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীর বর্তমান সংখ্যা ১৭ শতাংশ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
একটি সরকারি নথি অনুসারে, সেই লক্ষ্যে সরকার স্টেম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) ভিত্তিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা পূরণের জন্য সরকার শ্রেণিকক্ষে উপযুক্ত প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিষয় পড়ানোকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং পাঠ্যক্রমে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবি-তে বাজেট বরাদ্দ করছে।
এছাড়া দক্ষ আইটি জনবল তৈরির লক্ষ্যে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের চাহিদা মেটাতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীকে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এক লাখ তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
ইতোমধ্যে ৩৬ হাজারের বেশি লোককে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) আয়োজিত প্রকল্পটি প্রায় ২ লাখ ৩৪ হাজার লোককে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে এবং তাদের বেশিরভাগই দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন আইসিটি কোম্পানি-প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে।
উদ্দীপিত বাস্তবতা এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটিসহ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে নথিতে বলা হয়েছে, দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হবে এবং এ ধরনের ৫৭টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে।
৬৪টি জেলায় এবং ১৬টি ডিজিটাল ভিলেজে শেখ কামাল আইটি প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে যাতে তরুণদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া যায়।
পাশাপাশি প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লক-চেইন, রোবোটিক্স, বিগ ডেটা, ক্লাউড কম্পিউটিং ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি তার কার্যালয়ে (পিএমও) অনুষ্ঠিত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বৈঠকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রতি বছর প্রায় ২২ লাখ লোক চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। এই বিশাল জনশক্তিকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সঠিকভাবে গড়ে তোলা গেলে তা দেশের জন্য বিরাট সুফল বয়ে আনবে।
তিনি আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগগুলো কাজে লাগানোর জন্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্সূচিতে মনোযোগ দেয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
সরকারি নথি অনুযায়ী, কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ১২ বছর আগে ছিল ১ দশমিক শুন্য শতাংশের কম, বর্তমানে এখন ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।
কারিগরি শিক্ষার তালিকাভুক্তির হার হল শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিসহ কারিগরি-বৃত্তিমূলক শিক্ষা কার্যক্রমে নথিভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের শতকরা হার।
২০২২ শিক্ষাবর্ষে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ২৬ হাজার ৮৪৬ জন শিক্ষার্থী প্রাক-ভোকেশনাল কোর্সে নথিভুক্ত হয়েছে এবং ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩৪টি কারিগরি স্কুল ও কলেজের ৯ম শ্রেণির ২০ হাজার ৬১৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।