পাকিস্তানে চলছিল প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট। এরইমধ্যে শুরু হল ভারতের হামলা, চললো ভারত-পাকস্তান যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের মাঝে পড়ে গেলেন বাংলাদেশি ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন। পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) আলো ছড়িয়ে শুরু থেকে আলোচনায় এসেছিলেন এই লেগস্পিনার। তবে যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে পড়ে পিএসএল।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ওই সময়ে ভয় নিয়ে পাকিস্তানে অবস্থানের শেষ দিকের মুহূর্তগুলোকে স্মরণ করেছেন রিশাদ।
গতকাল শনিবার বিকেলে ইসলামাবাদ থেকে বিশেষ ভাড়া করা বিমানে দুবাই হয়ে ঢাকায় এসেছেন রিশাদ ও নাহিদ রানা। দেশের ফিরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েই জানালেন নিজেদের অভিজ্ঞতা ও স্বস্তির কথা।
এবার পিএসএলে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলছিলেন রিশাদ। নাহিদ খেলতে গিয়েছিলেন পেশোয়ার জালমির হয়ে। শুক্রবার আইপিএল ও পিএসএল স্থগিত হয়ে যাওয়ার খবর আসে৷ ক্রিকেটের আলোচনা ছাপিয়ে এখন কেবল নিরাপত্তা ইস্যু।
শুরুতেই দেশে ফেরার স্বস্তি প্রকাশ করেন রিশাদ,’ভালোয় ভালোয় ফিরে আসছি। ভালো লাগতেছে আলহামদুলিল্লাহ।’
রিশাদ জানান তারা উড়ে আসার ২০ মিনিট পরই নাকি সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়,’আমাদের ফ্লাইট উড্ডয়ন করার ২০ মিনিট পর ওই বিমানবন্দরে একটা মিসাইল পড়েছে। তো ওই মিসাইল পড়ার পর আমরা একটু শকড হয়ে গেছি যে হয়তো আল্লাহ ভালো চাইছে বলেই আমরা দেশে ফিরে আসছি।’
বৃহস্পতিবার নাহিদের দল পেশোয়ার জালমি-করাচি কিংসের ম্যাচ শুরুর আগেই বাতিল হয়। রাওয়ালপিন্ডিতে সেই মাঠেই আছড়ে পড়ে একটি ড্রোন। পরদিন নাহিদ-রিশাদের দলের খেলা ছিলো সেখানে।
পুরো পরিস্থিতিতে বেশ আতঙ্কে ছিলেন বলে জানান রিশাদ, ‘আসলে প্রথম যে পরিস্থিতি আমরা দেখেছি এবং শুনতে পেয়েছি… শোনার পর একটু আতঙ্ক তো হয়েছিলাম সবাই। ভয় কাজ করছিল। শোনার পর সবাই সাপোর্ট করছিল দেশ থেকেও, টিম ম্যানেজম্যান্ট থেকেও। বিসিবি থেকেও অনেক খোঁজখবর নিয়েছে সবসময়। পিসিবি ও পিএসএল টিমও খোঁজ নিয়েছে আমরা ভালো আছে কি না।’
‘পরিবার তো সবসময় টেনশন করে বাইরে থাকলে। নরমালি যখন শুনবে আশেপাশে এরকম যুদ্ধ হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই টেনশন করবে। চেষ্টা করেছি তাদের যত ভালো রাখার, ভালো ইতিবাচক কথা বলার, যেন টেনশন না করে।’
রিশাদের থেকেই বয়সে ছোট নাহিদ আরও ঘাবড়ে গিয়েছিলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই নাহিদ রানা একটু ঘাবড়ে গেছে এবং একটু চুপচাপ ছিল। আমি চেষ্টা করেছি কীভাবে… ওকে বলছি টেনশনের কিছু নাই, আমরা দুজন আছি। আল্লাহ তো আছেই। কিছু হবে না ইনশাল্লাহ।’
‘স্বাভাবিকভাবেই এরকম হলে একটু ভয় কাজ করবে। পরিস্থিতি হিসেবে দেখা যাবে যাব কি, যাব না।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হয়েছে৷ ফলে পিএসএল ও আইপিএল আবার মাঠে গড়াতে পারে। খেলা হলে আবার যাওয়ার ইচ্ছা রিশাদের, ‘(পিএসএলের বাকি অংশে) খেলার তো ইচ্ছে সবসময় আছে। শিফট হয়ে যদি দুবাইতে আসে বা যদি এটা কন্টিনিউ হয়, চেষ্টা করব যাওয়ার।’
রিশাদ হোসেন পিএসএলে খেলেছেন পাঁচ ম্যাচ। নাহিদের মাঠে নামার আগেই শুরু হয় যুদ্ধ, ফলে অভিষেকের আগেই তাকে ফিরতে হয় দেশে।