ঢাকা শহরের সাতটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি কলেজকে একত্রিত করে পৃথক একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দীর্ঘদিন ধরে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করে আসছিল। সেই আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে সরকার অবশেষে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চূড়ান্ত করার জন্য আগামী রবিবার (১৬ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) এক বৈঠকে তা ঘোষণা করা হবে।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে ঢাকা শহরের সাতটি বড় কলেজ— ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ।
এসব কলেজে বর্তমানে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন এবং এক হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত আছেন।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি নিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পরেও প্রশাসনিক জটিলতা, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘ বিলম্ব, শিক্ষকদের অভাব এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার সংক্রান্ত নানা সংকটে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এই প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন,”বিগত সাত বছরে সাত কলেজ ইস্যুতে ঢাকা শহর অনেকবার অচল ছিল। পরীক্ষার তারিখ, ফলাফল প্রকাশ, গণহারে ফেল—এসব সমস্যার সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীরা রক্ত ঝরিয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলনের পর এবার আমরা এর সমাধান দেখতে পাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য আনন্দের এবং গর্বের মুহূর্ত।”
ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী আফজালুল হাসান রাকিব বলেন,”এটি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য মুক্তির দিন। দীর্ঘ শোষণ ও বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আমরা আশাকরি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর সুফল পাবে।”
ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার মৌ বলেন,”আমাদের বহুদিনের স্বপ্ন পূরণের সময় এসে গেছে। এই ঘোষণা আমাদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে। এটি আমাদের শিক্ষা জীবনে এক নতুন অধ্যায় রচনা করবে।”
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত নামকরণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা আগামী রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ১০টায় ইউজিসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষার্থীরা আশাবাদী যে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে সাত কলেজের প্রশাসনিক জটিলতা দূর হবে এবং তারা আরও উন্নত শিক্ষার সুযোগ পাবেন।