লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার করপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি আট লাখ টাকার বিনিময়ে করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মধ্যরাতে ফেসবুকে প্রচার করা ওই কমিটির সভাপতি পারভেজ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হৃদয়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা জানিয়েছেন, নতুন কমিটির সভাপতি পারভেজ স্যানেটারি মিস্ত্রি আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব চা দোকানি। তারা কেউ ছাত্র নন, টাকার বিনিময়ে তারা হঠাৎ নেতা হয়েছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, সোমবার (১৬ জানুয়ারি) মধ্যরাতে করপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের (আংশিক) ১২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ফেসবুকে দেওয়া হয়। রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল জামান অপু মাল ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ হাসান অভি এ কমিটি অনুমোদন করেন।
এদিকে, নতুন কমিটির সহসভাপতি সাব্বির আল সাফা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব হোসেন অভি, সাংগঠনিক সম্পাদক দাউদ হোসেন এলাহান কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে মানতে নারাজ। শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দাউদ হোসেন এলাহান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়ার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তারা অভিযোগ তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রতিবেদকের কাছে এসংক্রান্ত একটি চিঠি এসেছে।
তবে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে কমিটির সভাপতি পারভেজ স্যানেটারি মিস্ত্রি আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব চা দোকানির সত্যতা মিলেছে। তাদের কাজ করার একাধিক ছবি ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে।
করপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিম মাহমুদ রিফাত বলেন, ‘নতুন কমিটির শীর্ষ দুই নেতা কখনো ছাত্রলীগ করেনি। সবাই জানে সভাপতি পারভেজ স্যানেটারি মিস্ত্রি, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব শ্যামপুর বাজারের চা দোকানি। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে কমিটি বিলুপ্ত করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে আমিও জেলা নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছি।’
বক্তব্য জানতে নতুন কমিটির সভাপতি পারভেজ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হৃদয়ের মোবাইল ফোনে কল করে বন্ধা পাওয়া যায়। এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।
করপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম তছলিম হোসেন বলেন, আট লাখ টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছে। বিতর্কিত অছাত্র দুজনকে সভাপতি-সম্পাদক করা হয়। তাদের পেশা-কর্মের কথা তুলে ছোট করতে চাই না।
রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল জামান অপু মাল বলেন, কিছুদিন আগে আমরা করপাড়ায় কর্মী সম্মেলন করেছি। এরপর কমিটি ঘোষণা করা হয়। যারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে পারেনি তারাই অপপ্রচার করছে। আট লাখ টাকার টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি বলেন, করপাড়া ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে অভিযোগ থাকলে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।