চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা একটি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ সদস্যকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে পরিষদ কার্যালয় থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পাঁচ ইউপি সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ইউপি সদস্যরা হলেন– সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ সোহেল, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খায়ের হোসেন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলাম, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রবিন চৌধুরী। এ ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীর হাতে লাঞ্ছিত হওয়া অপর ইউপি সদস্যরা হলেন– ওহিদুল আলম, শাহনাজ বেগম, রোজী আক্তার ও ফাতেমা বেগম।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোনাইছড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুদ্দিন মিন্টু ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহেদের নেতৃত্বে যুবদল ও শ্রমিক দলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এসে উপস্থিত ইউপি সদস্যদের মারধর করে। পরে লাঞ্ছিত করে তাদের পরিষদ থেকে বের করে দেয়।
আহত ইউপি সদস্য সোহেল জানান, জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যা লি অনুষ্ঠিত হবে বলে তাদের মঙ্গলবার পরিষদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠানে আসার দাওয়াত দেন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব। মঙ্গলবার বিকেলে তিন নারী ইউপি সদস্যসহ ৯ জন সদস্য অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পরিষদ কার্যালয়ে এসে পুরুষ ইউপি সদস্যদের মারধর করে গলা ধাক্কা দিয়ে পরিষদ থেকে বের করে দেয়। এ ছাড়া পরিষদের তিন নারী সদস্যসহ চারজনকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত চৌকিদার রাসেল, সালাহ উদ্দিন ও ক্ষীরমোহন ইউপি সদস্যদের রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাদের ওপরও হামলা করে তারা। ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লা আল মামুনের। তিনি অনুষ্ঠানে আসেননি।
সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লা আল মামুন বলেন, ‘উপজেলায় বিশেষ কাজ থাকায় তিনি অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি। ইউপি সদস্যদের ওপর হামলার বিষয়টি তার জানা নেই।’
অভিযোগ অস্বীকার করে সোনাইছড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুদ্দিন মিন্টু বলেন, ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে সভা করার কারণে স্থানীয় জনগণ ক্ষেপে যায়। পরে তাদের থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি জানান, ইউপি সদস্যদের মারধর ও লাঞ্ছিত করে তাদের পরিষদ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।