জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থী হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ইসলাম গ্রহণের পর তার নতুন নাম রাখা হয়ছে আহমাদ কাবীর। তার আগের নাম ছিল অর্ণব দাস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর হলফনামার মাধ্যমে নিজের নাম পরিবর্তন করেছেন তিনি।
সদ্য ইসলাম গ্রহণ করা আহমাদ কাবীর একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৬ সালে মেজো বোনের ইসলাম গ্রহণের পর ইসলামের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হতে থাকে। এরপর মুসলিম বন্ধুদের কাছ থেকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানার আগ্রহ জন্মায়। সেখান থেকেই ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পর সিদ্ধান্ত নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করতে থাকি। অবশেষে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে গত ১০ মার্চ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি।
নওমুসলিম আহমাদ কাবীর (পূর্বের নাম অর্ণব দাসের) জন্মস্থান রাজধানীর বাড্ডার বড় বেরাইদে ৪২নং ওয়ার্ডে। তিনি বাবা-মার একমাত্র ছেলে সন্তান এবং ভাই-বোনদের মধ্যে সবার ছোট। বাবা ইন্দ্রজিত দাস দক্ষিণ বাড্ডায় মাছের ব্যবসা করেন। মা পারুল দাস ২০০৮ সালেই মারা গেছেন।
ইসলাম গ্রহণের পর আহমাদ কাবীর তার জন্মস্থান বেরাইদেই এক বন্ধুর বাসায় আছেন। ইসলাম গ্রহণের পর কাবীরকে এলাকার মুরব্বি, বন্ধু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইয়েরা সব রকমের সহযোগিতা করেন বলে জানান তিনি।
আহমাদ কাবীর বলেন, আমার বোন ইসলাম গ্রহণ করার পরপরই আমার মধ্যে একটা কৌতুহল জাগে। আমি ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য অনেক বই, কিতাব পড়ি। আল্লাহ ও তার প্রেরিত রাসূল সম্পর্কে জানি। আমি সত্যতা পাই ইসলাম ধর্মের। এরপর ইসলাম সম্পর্কে আরও জানতে ওয়াজ শুনতাম। একপর্যায়ে ইসলামের প্রতি ভালোবাসা জন্মে। তখন থেকেই লুকিয়ে নামাজ পড়তাম আমি। প্রায় দুই বছর এলাকার বাইরে গিয়ে লুকিয়ে নামাজ পড়েছি।
আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগে থেকেই নামাজ পড়তাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মানতাম। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ও ভালোবাসা জন্মানোর কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, গত তিন মাস আগে আমি পরপর তিন দিন ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি নামাজরত অবস্থায় আছি এবং সালাত আদায় করছি।
ইসলাম গ্রহণের পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে কাবীর বলেন, ‘হ্যাঁ, আমার বাবা ও বোনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা আমাকে আগের ধর্মে ফিরে যেতে বলে।
‘আমি সবার কাছে দোয়া চাই, আল্লাহ যেন আমাকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সাহায্য করেন এবং আমি যেন আল্লাহর প্রিয় একজন মানুষ হতে পারি’, জানান আহমাদ কাবীর।