ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে আজ বুধবার। নির্বাচনের আগেই নিখোঁজ হন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী (মোটরগাড়ি প্রতীক) আবু আসিফ আহমেদ। উপনির্বাচনে আসিফের প্রচারণাও অনেকটা থেমে ছিল। সবশেষে আজ ভোট দিতে এসে ভোটের পরিবেশ দেখে ভোট না দিয়েই ফিরে গেছেন আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরীন।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা একটার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র ভোটকেন্দ্রে তিনি ভোট যান৷ এ সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রের ২ নম্বর বুথে নিজের ভোট দিতে যান। কিন্তু ভোট না দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যান তিনি।
উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেহেরুননিছা বলেন, এটি একটি অসুস্থ নির্বাচন। কিছুক্ষণ আগে এসে দেখলাম, একজন ভোটারের আঙুলের ছাপ নিয়ে অন্যজন ভোট দিচ্ছেন। দিনভর সব কেন্দ্রেই এমন হচ্ছে। কর্মীদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে। আগেও এজেন্টদের ভয় দেখানো হয়েছে। তাঁদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না, সেহেতু রেজাল্টটা কী আসবে, আপনারা বুঝতে পারছেন। আমাদের কর্মীরা পলাতক। এ অবস্থায় আমি আর কী বলতে পারি? প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নিখোঁজ। ভোটের এই পরিবেশ দেখে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব কেন্দ্রেই একজনের ভোট আরেকজন দিচ্ছেন। এটা কি নির্বাচন? ভোটের এই পরিবেশ দেখে আমি ভোট দিইনি।
এ সময় জানতে চাওয়া হলে– নির্বাচন বর্জন করছেন কি না– জবাবে মেহেরুননিছা বলেন, আমি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে পরে বিষয়টি জানাব।
মেহেরুননিছা মেহেরীন অভিযোগ করেন, প্রশাসন আমাদের বিপক্ষে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমরা বিপুল ভোটে জয়ী হতাম। আমি নিজে এজেন্ট দিইনি, কর্মীরা দিয়েছিলেন। যে দুই-চারটিতে এজেন্ট দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁরা কেন্দ্রে ঢোকার সাহস পাচ্ছেন না। যেকোনো মুহূর্তে তাঁরা গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে ভয় দেখানো হচ্ছে। ভয়ে তাঁরা পলাতক রয়েছেন।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জের ইউএনও ও উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হচ্ছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ সঠিক না।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। গত শুক্রবার থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার তাঁর স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরীন স্বামীর সন্ধান চেয়ে এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের কাছে লিখিত আবেদন করেন।