এনামুল হোসেন, ববি প্রতিনিধি
কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়াই আগামী রোববারের (৯ এপ্রিল) পরিবর্তে সোমবার ছুটি করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার করেছিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ মূলত রোববার বিভিন্ন বিভাগের বর্ষ/সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা রেখেছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর৷ এতে ভোগান্তি ও সেশনজটের কবলে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে৷
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ২০১৮-১৯ ভর্তি শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগ ও অর্থনীতি বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষার্বর্ষের গণিত বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগ, স্নাতকোত্তর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী ৯ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পক্ষে স্বাক্ষরিত এক নোটিশে ৯ এপ্রিলের সকল পরীক্ষা স্থগিত করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷
এদিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের এমন আচরণে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে৷ এমনই একজন রোকন। এই শিক্ষার্থী লিখেন, ‘কতটা উদাসীন হলে এমনভাবে রুটিন তৈরি করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর। তাদের কাজ কি তাই হয়তো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানেন না!’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৯ তারিখের স্থগিত পরীক্ষা রসায়ন ও গণিত বিভাগের এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে, লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষ ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর ১৭ এপ্রিল, মার্কেটিং বিভাগের স্নাতক প্রথমবর্ষ ও ফিন্যান্স বিভাগের মাস্টার্সের ৭ মে ওঅর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের পরীক্ষা আগামী ১১ মে অনুষ্ঠিত হবে৷
অন্যদিকে অধিকাংশ বিভাগের ঈদের আগেই সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৯ তারিখের পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি৷ বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে সেজনজটে পড়ার দুশ্চিন্তাও জেঁকে বসেছে তাদের।
কামাল (ছদ্মনাম), বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যন্ড ব্যাংকিং বিভাগের স্নাতকোত্তরে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই আমরা রুটিন অনুযায়ী পড়াগুলোর সাথে একটা টাইম সেট করে থাকি। যাতে মানসিকভাবে এগিয়ে থাকা যায়। এখন পরীক্ষা পেছানোয় সব পরীক্ষাগুলোর মধ্য একটা ইমব্যাল্যান্সড সিচুয়েশন তৈরি হলো। আবার এখন একটা পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় আমাদের ইদের পরে যে মাস্টার্সের ২য় সেমিস্টার এর ক্লাস শুরু হয়ে এক সপ্তাহ ক্লাস হতো সেটাও পিছিয়ে গেল। কারণ ঈদের এক সপ্তাহ পরই আবার পুরো মে মাস ভার্সিটি বন্ধ। তীব্র সেশনজটের আশঙ্কায় আছি। ভার্সিটি প্রশাসন কতটা অজ্ঞ হলে ইস্টার সানডের বন্ধ ইস্টার মানডে বানাইয়া রোববার ছুটি সোমবার দিয়ে রাখে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে!
আজমির হাসান, পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে। তিনি বলেন, কতটা উদাসীন হলে এমনভাবে রুটিন তৈরি করা যায়। ইস্টার সানডের বন্ধ দেখে রুটিন করেনি। এখন পরীক্ষার আগ মুহূর্তে নোটিশ দিচ্ছে যে পরীক্ষা স্থগিত। উদাসীনতার একটা মাত্রা থাকে।
বিষয়গুলো নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর স ম ইমানুল হাকিম বলেন, আমি ছুটিতে আছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না৷
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর সম্বলিত পরীক্ষা স্থগিত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার পক্ষ থেকে উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক স্বাক্ষর করেছে৷
উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সাজ্জাদ উল্লাহ ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলে থাকলে স্যার যা বলেছেন সেটাই।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের কাছ থেকে এমন ভুল কেন হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একাডেমিক ক্যালেন্ডারের দেখে রুটিন করা হয়েছে, ক্যালেন্ডারে ছুটি ছিল না তাই এমনটা হয়েছে৷