নির্বাচন থেকে পালিয়ে বেড়ানো বিএনপির জন্য শুভ হচ্ছে না, হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপির এই নির্বাচন বিমুখতা আসলে গণতন্ত্র বিমুখতারই শামিল।
সোমবার (১০ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমনটা জানান। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই, সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। তবে যেকোনও রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কী করবে না, সেটি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সবসময়ই নির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমানতা থাকে। তারা কোনও কোনও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। আবার কোনও কোনোটায় অংশগ্রহণ করে নাই।
দোদুল্যমানতাই বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি তাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবেও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে পারতো। তাদের জন্য সেটি ভালো হতো এবং তারা তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারতো। নির্বাচন কী রকম হচ্ছে— সেটিও তারা পরখ করতে পারতো। আপনারা দেখেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন কী রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। অর্থাৎ সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হবে— সেটি নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই নিশ্চিত করেছে।
‘সরকার সবসময় নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করছে। সুতরাং, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, সেটিই তাদের জন্য মঙ্গলজনক, গণতন্ত্রের জন্যও মঙ্গলজনক’, যোগ করেন সম্প্রচারমন্ত্রী৷
সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন, ভারতে পিআইবিকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কোন সংবাদটা ঠিক, কোন সংবাদটা ঠিক নয়, সেটি তারা চেক করবে। যখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হবে— এই সংবাদটা ঠিক নয়, সেটি সংবাদ প্রচারকারীকে নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিতে হবে এবং সরিয়ে না নিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের দেশে এ রকম কোনও ব্যবস্থা আমরা নেইনি। তার মানে এই যে, আমাদের দেশে গণমাধ্যম পার্শ্ববর্তী ভারতের চেয়েও অনেক বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করে। স্বাধীনতা ভোগ করে।
পাশ্ববর্তী দেশের গণমাধ্যম প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, সম্প্রতি ভারতে ট্যাক্স অফিসের পক্ষ থেকে বিবিসির কার্যালয়ে কয়েকদিন ধরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমাদের কোনও পত্রিকা কিংবা টেলিভিশনে তো ট্যাক্স অফিসের কেউ যায়নি এখনও। প্রথম আলোতেও যায়নি এখনও। যদিও বা প্রথম আলোর সাম্প্রতিক একটা রিপোর্ট নিয়ে হই চই বেঁধেছে। এই রিপোর্টটা অবশ্যই আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে খাটো করেছে। সে কারণেই প্রথম আলো সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু অনলাইনে সরিয়ে নিলেও তো সরে না। সেটি নিয়ে দেশে নানা জায়গায় মানববন্ধন হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের সব সাংবাদিক সংগঠন প্রথমবারের মতো একটি পত্রিকার রিপোর্টের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছে। আগে কখনও কোনও পত্রিকার রিপোর্টের বিরুদ্ধে দেশে সব সাংবাদিক সংগঠন বিবৃতি দেয় নাই, এই প্রথমবার দিয়েছে। কারণ, এখানে ভুল হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য— প্রথম আলো এখনও ভুল স্বীকার করে নাই।