দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো: এনামুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার সক্ষমতা সরকারের নেই।
আজ শনিবার (১৩ মে) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) কার্যালয়ের নেতৃত্বে সাড়ে চার হাজার স্বেচ্ছাসেবক রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে জলোচ্ছ্বাসের কোনো ভয় নেই। তবে ভারী বৃষ্টির কারণে ভূমিধস হতে পারে। এটি মাথায় রেখে, আমি স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত থাকতে বলেছি।’
পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা একই এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ায় কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান ইউএনবিকে বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহা বিপদ সঙ্কেত এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল এবং তাদের উপকূলীয় দ্বীপ ও চরগুলো ৮-১২ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে রোহিঙ্গাদের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো। আজ শনিবার জাতিসঙ্ঘ থেকে জানানো হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মতে, ঘূর্ণিঝড় মোখা সরাসরি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতিমূলক পরিকল্পনা রয়েছে। আইওএমের ব্যবস্থাপনায় থাকা কক্সবাজারের ১৭টি ক্যাম্পে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতির জন্য ১০০ জন শরণার্থী স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য সুরক্ষা-সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শরণার্থীদের জন্য জরুরি আশ্রয়-সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৩৩টি মোবাইল মেডিক্যাল টিম ও ৪০টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রেখেছে। জাতিসঙ্ঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন ২৩০ টন শুকনা খাবার ও সাড়ে ২৪ টন প্রোটিন বিস্কুট প্রস্তুত রেখেছে। এছাড়াও প্রয়োজন হলে প্রতিদিন ৫০ হাজার মানুষকে গরম খাবার বিতরণের প্রস্তুতি সংস্থার রয়েছে।