ইবি প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় নাম শুনলে অনেকের মনে হয় এটি যেন কোনো একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের অধিকারভুক্ত, ধর্মীয় কালচার বা তাদের অবাধ বিচরণের স্থান। তবে, এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল এবং আজকের এই আনন্দঘন পূজা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক হিসেবে আমি সব শিক্ষার্থীকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শিক্ষার্থী হিসেবে দেখি। যখন কোনো শিক্ষার্থী ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতে আগ্রহী হয়, তখন আমি খুব আনন্দিত হই।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “তোমরা যখন জ্ঞান অর্জনের জন্য জীবনকে আলোকিত করে বাহিরে যাবে, তখন তোমাদের সেই জ্ঞানই হবে তোমাদের মুক্তির পথ, এবং এটি সমাজেরও মুক্তি এনে দেবে। জ্ঞান চর্চার কোনো ধর্মীয় বাধা নেই।”
তিনি তার গ্রামের বাগেরহাটের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে হিন্দু-মুসলমান একসাথে বসবাস করে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বেশি। “আমরা সেখানকার একটি অমূল্য সখ্যতার মৈত্রী বন্ধনে বেড়ে উঠেছি। ধর্মীয় অধিকার সকলের মানবাধিকার। সব ধর্মই মানবিক চরিত্র গঠনের কথা বলে,” বলেন উপাচার্য। তিনি সবাইকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মৈত্রী সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং বলেন, “আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে এবং সকল ধর্মের ছাত্রদের জন্য ইবি এমন একটি সুযোগ তৈরি করেছে।”
এদিকে, সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে পূজাঙ্গনে প্রতিমা স্থাপন ও প্রধান পুরোহিতের বাণী অর্চনার মধ্য দিয়ে বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবীর পূজা শুরু হয়। এরপর পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়।
পূজা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, চুয়াডাঙ্গা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুব্রত কুমার চক্রবর্তী।