নির্বাচনী ব্যবস্থাকে অধিকতর গণতান্ত্রিক ও আধুনিক করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘জনগণের মতপ্রকাশের সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন, আর সেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে অধিকতর গণতান্ত্রিক ও আধুনিক করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার সকালে তাঁর বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত জনগণের মতামতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রদ্ধাশীল। জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস।
তিনি বলেন, এদেশে এ যাবৎ নির্বাচন ব্যবস্থা যতটুকু উন্নতি হয়েছে বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারই এ উন্নতি করেছে। গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করেনি শেখ হাসিনা সরকার বরং অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই বিএনপি নেতারা রাতদিন সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছেন, মিডিয়ায় ঝড় তুলছেন, সংসদে আনুপাতিক হারের চেয়ে বেশি সময় পাচ্ছেন, বক্তব্য দিচ্ছেন পার্লামেন্টে এবং পার্লামেন্টের বাইরে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি থেকে গণতন্ত্র শিখতে চাই না, বিএনপির গণতন্ত্রের মূলে রয়েছে জনগণের অধিকার হরণ, ভোটারবিহীন নির্বাচন, হ্যাঁ- নাভোট, সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার, আগুন সন্ত্রাস আর দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর শেখ হাসিনা সরকারের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় বিএনপিনেতাদের বুকে বিষজ্বালা বেড়েই চলছে, আর এথেকেই হতাশায় ভুগতে থাকা বিএনপি নেতারা আবোলতাবোল বলছেন।
‘আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা কতটুকু-নির্বাচন দিয়ে দেখতে বলেছন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এই প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে আসুন, যথাসময়ে নির্বাচন হবে সংবিধানসম্মত ভাবে। সেই নির্বাচনেই প্রমাণ হবে-জনগণ কি ইতিবাচক রাজনীতির দিকে, নাকি নেতিবাচক রাজনীতির দিকে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ‘বিএনপি মহাসচিবের’ উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কি উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিবে,নাকি লুটপাটের পক্ষে রায় দিবে? দেশেযে উন্নয়নের জোয়ার বইছে, মানুষ কি উন্নয়ন আর অর্জনকেভোট দেবে- নাকি দুর্নীতিকে ভোট দেবে?
তিনি বলেন, আসলে সারাক্ষণ নির্বাচন আতঙ্কে ভুগতে থাকা বিএনপি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়েই আগে ভাগে তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একথা সেকথা বলছেন।
‘নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হলে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হবে’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের দৃষ্টিতে নিরপেক্ষতার মানদন্ড কী? তার প্রমাণ আপনারা ক্ষমতাসীন হয়ে বারবার দেখিয়েছেন। বিএনপি নেত্রী এক সময় বলেছিলেন ‘দেশে শিশু আর পাগল ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নয়’, দেশবাসী জানে যতক্ষণ বিএনপির ক্ষমতা দখলের পথ নিরাপদ না হবে, নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি না পাবে-ততদিন তাদের নিরপেক্ষতার মানদন্ড নিশ্চিত হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপি যে কোন উপায়ে নির্বাচনে জয়ের নিশ্চয়তা এবং পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারার মানসিকতাই এখন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রধান অন্তরায়। জন্মলগ্নথেকেই বিএনপির রাজনীতি ক্ষমতা দখলের রাজনীতি। ক্ষমতার প্রশ্নে তাদের কাছে স্বৈরতন্ত্র ও গণতন্ত্র সবই সমান।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের মন্ত্র ও ক্ষমতার তন্ত্রে বিভোর বিএনপির এ দেশের গণতন্ত্র, জনমত, নির্বাচন এবং রাজনীতির অর্থবহ ও কল্যাণকর কোন পন্থাতে আস্থা ছিল না, এখনও নেই।