বিএনপি ভোটে জিততে পারবে না বুঝে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সংঘাত চায় না। সংঘাতমুক্ত, শান্তিপূর্ণ, অবাধ, সুষ্ঠু একটা নির্বাচন আমরা করতে চাই। এটা আমাদের জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি। সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন তো ইন্ডিপেন্ডেন্ট করেছি।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার কারণে নির্বাচন ব্যবস্থা আজকে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অধীনে সাব অফিস নয়, নির্বাচন অফিস এখন একটা স্বাধীন অফিস। স্বাধীন নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়েছে। এই ইনিশিয়েটিভ প্রধানমন্ত্রীর। নির্বাচন ব্যবস্থায় কারচুপি, জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই।
দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ কষ্টে থাকলেও শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭০ শতাংশ জনগণ শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল। জনগণের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে আওয়ামী লীগও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। ২০০৯-পূর্ববর্তী এবং ২০০৯ পরবর্তীকালে নির্বাচন কমিশন ছিল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীনে, শেখ হাসিনা এটিকে পরিবর্তন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশিদেরকে কী করে বোঝাব যে, বিএনপি এমন একটা দল, সেই দলকে গ্যারান্টি দিতে হবে নির্বাচন হলে তারা জিততে পারবে। এ গ্যারান্টি না দিলে তারা কখনও চলমান নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল হবে না।’
বিএনপি আগ্নেয়াস্ত্র এনে মজুদ করছে বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি সহিংসতার পথে যাচ্ছে। তারা মনে করে অস্ত্র শক্তি হলো আসল শক্তি। যারা অস্ত্র দিয়ে ক্ষমতায় আসে তাদের প্রতি জনগণের আস্থা থাকার কথা নয়।
তিনি বলেন, ‘সীমান্তের এপার থেকে খবর পাচ্ছি, অস্ত্র কিনছে তারা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ তাদের অস্ত্র সরবরাহের একটি ঘাঁটি। আগ্নেয়াস্ত্র এনে তারা মজুদ করছে।’
ভোটের পর কম্বোডিয়ার উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একটা আন্তর্জাতিক সংবাদ দেখে অনেকে আনন্দিত, কম্বোডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। কম্বোডিয়ায় বিরোধীদল অংশ নেয়নি, সেজন্য নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। এখানেও যদি বিরোধী দল অংশ না নেয়, সেটা কার অপরাধ?
মির্জা ফখরুল ইসলামের প্রতি ইঙ্গিত করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এতদিন যার মুখ-চোখ শুকিয়ে শুকিয়ে গিয়েছিল, এখন আবার গলায় পানি এসেছে। ফখরুলের গলায় এখন অনেক পানি৷ দেখতে মনে হয় অনেক ভালো মানুষ, অথচ মুখে এত বিষ! কী বাজে ভাষায় বক্তৃতা করে।
বিএনপির সমাবেশগুলোতে জনসমাগমের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমাবেশের তুলনা করে কাদের বলেন, সবাই দেখেছে, এটা হল শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রতি আস্থার একটা নিদর্শন।
দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সতর্ক থাকবে, কেউ সংঘাত করতে এলে প্রতিহত করা হবে। বিএনপি খালি মাঠ পেলে সংঘাত করতে চাইবে। আমরা সেই সুযোগ দেব না। বিএনপি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী নয়; অস্ত্র শক্তিতে বিশ্বাসী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, এরশাদ কিংবা জিয়া কেউ-ই জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। কারণ তাদের জনগণের ওপর আস্থা নেই। বিএনপি জানে নির্বাচন হলে তাদের অবস্থা কী হবে। নির্বাচনে বিএনপিকে জয়ের নিশ্চয়তা না দিলে তারা নির্বাচনের প্রতি আস্থাশীল হবে না।
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে এদিন মতবিনিময় সভা করেন কাদের।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ ফারুক খান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল চৌধুরী, সুজিত রায় নন্দী সভায় উপস্থিত ছিলেন।