রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরের নৌ বহরের তিনটি জাহাজ বন্ধুত্বপূর্ণ সফরে বাংলাদেশে এসেছে। আর, এর মধ্য দিয়ে সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর দেশটির নৌবাহিনীর কোনো জাহাজ বাংলাদেশ সফরে আসলো।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে খোদ ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাসও।
রবিবার (১২ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (আগের টুইটার) রুশ দূতাবাস লিখেছে: চট্টগ্রাম বন্দর সফর করছে রাশিয়ান প্যাসিফিক ফ্লিট স্কোয়াড্রন। রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য যা এক বিশাল মাইলফলক। ৫০ বছর আগে শেষবার কোনো রাশিয়ান/সোভিয়েত নৌবাহিনীর জাহাজ বাংলাদেশ সফর করেছিল।
বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে ভেড়া রুশ নৌবহরের ওই জাহাজগুলোর মধ্যে রয়েছে সাবমেরিন বিধ্বংসী দুটি যুদ্ধজাহাজ। সেগুলোর নাম ‘অ্যাডমিরাল ত্রিবুতস’ ও ‘অ্যাডমিরাল প্যানতেলেইয়েভ’। অপর জাহাজটি জ্বালানিবাহী ট্যাংকার। সেটির নাম ‘পেচেনগা’।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দার মান্টিটঙ্কি তাসকে বলেন, ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি দেশকে রক্ষা করতে এসেছিল রুশ যুদ্ধজাহাজগুলো। স্বাধীনতাযুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় অনেক মাইন ছিল। সেখানে অনেক নৌযান ডুবে ছিল।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, মাইন সমস্যা সমাধানে অনেক দেশের কাছে সে সময় সহায়তা চেয়েছিল বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। কয়েকটি দেশ বিপুল অর্থের বিনিময়ে সহায়তা করতে রাজি হয়েছিল। তবে বাংলাদেশের তখন অর্থের ঘাটতি ছিল। তখন শুধু সোভিয়েত ইউনিয়নই মানবিক কারণে সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল।
চট্টগ্রাম বন্দর মাইনমুক্ত করার ওই অভিযান চলেছিল ১৯৭২ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৭৪ সালের জুন পর্যন্ত। সোভিয়েত নৌবাহিনীর ৮০০ জনের বেশি সদস্য ২৬ মাস ধরে মাইন সরানোর কাজ করেছিলেন। এ কাজ করতে গিয়ে তাঁদের একজনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে সোভিয়েত নৌসদস্যরা শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছিলেন।
তবে এবারের রুশ জাহাজগুলো পুরোপুরি বন্ধুত্বপূর্ণ এক সফরে বাংলাদেশে এসেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামে রাশিয়ার অনারারি কনসাল আশিক ইমরান।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক যে খুবই উচ্চপর্যায়ে রয়েছে, তার প্রমাণস্বরূপ রুশ যুদ্ধজাহাজগুলোর বাংলাদেশ সফর।