ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনড় থেকে ১৫টি শর্ত সাপেক্ষে উপাচার্যকে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন- রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদ, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াহিদুর রহমান ও শহিদুল ইসলাম শাহেদ। এছাড়াও অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনড় থেকে আমরা শর্তসাপেক্ষে একমাসের জন্য উপাচার্যকে সময় দিতে চাই। আমরা তার সাথে আলোচনায় আজ কিছু দাবি উত্থাপন করেছি। তিনি দাবিগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদি একমাসের মধ্যে দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হয় তাহলে উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
উপাচার্যকে দেওয়া শর্তগুলো হলো:
১। বিতর্কিত ট্রেজারারকে সম্পূর্ণ অপসারণ ও যোগদানে বিরত থাকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২। আইনগত প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রো-ভিসিকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে দৃশ্যমান যৌক্তিক কাজ দেখাতে হবে। পাশাপাশি জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিফলক নির্মাণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪। জুলাই বিপ্লবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫। একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অধ্যাপক ড. কলিমুল্লাহকে অপসারণ করতে হবে।
৬। বিগত দিনের নিয়োগের সার্কুলার বাতিল করে নতুন নিয়োগের সার্কুলার দিতে হবে। নিয়োগ বোর্ড থেকে জুলাই বিপ্লবের চেতনা বিরোধীদের অপসারণ করতে হবে।
এছাড়াও অন্যান্য দাবিগুলো ছিল- গ্রাউন্ডফ্লোরের সম্মুখ থেকে গেইট পর্যন্ত পিচ ঢালাই করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম (সকল গেটে) LED করতে হবে। ভিসি দপ্তরের বিতর্কিত কর্মচারীদের অপসারন করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় মাইশা মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে দাবিকৃত ৮দফা বাস্তবায়নের যথাযথ উদ্যেগ নিতে হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান ঠিক রেখে ভর্তুকি দিয়ে তদারকিসহ ২০ টাকা মূল্যের খাবারের প্যাকেজ চালু করতে হবে। নাম্বার টেম্পারিং এর সাথে জড়িত সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাপোযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বরাদ্দকৃত রুমের সমবণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে উপাচার্য আলোচনা সভায় বসলেও সভাকক্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে কোনোরকম সিধান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়। পরে সোমবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টা নাগাদ পদত্যাগ দাবি করা শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে আলোচনায় বসেন।