বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাদের খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে, হাইকোর্ট ও বিচারিক আদালতের রায়ও বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত এ রায় দেন, যা হাইকোর্টের সাজার বিরুদ্ধে ছিল। আপিল বিভাগ তার পর্যবেক্ষণে বলেন, মামলার বিচার প্রতিহিংসার ভিত্তিতে করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে মামলার আপিল শুনানি শেষ হয়। রায় দেয়ার জন্য এদিন ঠিক করা হয়েছিল।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আপিল শুনানি চারদিন ধরে চলেছে। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী, রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুদক আইনজীবী তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। একই সাজা হয়েছিল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরও। তবে, তাদের আইনজীবীরা রায়ের প্রত্যাশা করেন যে, সব আসামি খালাস পাবেন। তাদের মতে, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বিচারকের মাধ্যমে বিএনপির জিয়া পরিবারকে হেনস্তা করতে বিচারের নামে প্রহসন করা হয়েছিল।
রাষ্ট্রপক্ষ শুনানিতে বলেছিল, কোনো ব্যক্তিকে ধারণার ভিত্তিতে সাজা দেওয়া ঠিক নয়। তারা আরও জানান, মামলার নথিপত্র এবং সাক্ষ্যপ্রমাণে কোথাও বেগম খালেদা জিয়া বা অন্য আসামিদের দুর্নীতি বা অনিয়মের প্রমাণ মেলেনি।
মঙ্গলবার, কাজী সালিমুল হক কামাল নামক এক আসামির আইনজীবী খালাস চেয়ে শুনানি করেন। এই ঘটনাটি ছিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার আপিল শুনানির শেষ পর্ব।
২০১৮ সালে, এই মামলার চলাকালীন সময়ে, খালেদা জিয়া এবং তার পরিবার ও দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রধান অভিযোগ ছিল, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। আদালতে এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এরপর, মামলাটি নিয়ে দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক রাজনৈতিক ও আইনি আলোচনা শুরু হয়।