পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। সোমবার কর্তৃপক্ষ বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সারাদেশে ক্রমাগত রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছেন ইমরান খান।
শনিবার ইসলামাবাদে ইমরান খান তার বক্তবে গ্রেপ্তারে পর নির্যাতনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তা ও এক নারী বিচারককে দায়ী করেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের এই অভিযোগ দায়ের করল পুলিশ।
ইমরান খান এখনো মুক্ত এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু বলেননি। ইমরানের রাজনৈতিক দল ও পাকিস্তানের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির ইন্টারনেটে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সমর্থকরা খানকে ঘিরে রেখে পুলিশকে কাছে যাওয়া থেকে ঠেকাচ্ছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত শত শত লোক সেখানে অবস্থান করছেন।
পাকিস্তানের আইনানুযায়ী, কারো বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ করলে সে সম্পর্কে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটকে জানাতে হয়। এরপর তিনি তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তকে আটক করে থাকেন।
খানের বিরুদ্ধে রিপোর্টে ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক আলী জাভেদের সাক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যিনি ইসলামাবাদের সমাবেশে পাকিস্তানের পুলিশের ইন্সপেক্টর-জেনারেল এবং অন্য একজন বিচারকের সমালোচনা শুনেছিলেন। পিটিআই প্রধান খান বলেছিলেন,‘আপনি প্রস্তুত থাকুন, আমরা আপনার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আপনারা সকলে অবশ্যই লজ্জিত হবেন।’
পুলিশ ও বিচারককে হুমকি দেয়ার নুতন অভিযোগে ইমরান খান কয়েক বছর কারাদণ্ড পেতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী প্রচারণায় ইমরানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ক্ষুদ্র অভিযোগে এখন পর্যন্ত আটক হননি।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ফ্রিডম হাউজের মতে, সামরিক ও গণতান্ত্রিক সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে পাকিস্তানের বিচার বিভাগের রাজনীতিককরণ এবং ক্ষমতাসীনদের পক্ষ নেয়ার ইতিহাস রয়েছে।
খান ২০১৮ সালে পাকিস্তানের পারিবারিক শাসনের ধারা ভেঙে ক্ষমতায় আসেন। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল যে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ইমরান নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে, যেখানে দেশটির ৭৫ বছরের ইতিহাসের অর্ধেক সময় ধরে শাসন করে আসছিল পরিবারতান্ত্রিকভাবে।
এদিকে রবিবার দ্যা ইন্টারনেট অ্যাকসেস এডভোকেসি গ্রুপ নেটব্লক বলেন, ইমরান খান অনলাইনে ভিডিও বক্তব্য দেয়ার পর ইউটিউব যাতে দেখা না যায় সেজন্য পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথোরিটি একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
এর আগে চলতি মাসে পাকিস্তানের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এআরওয়াই টিভি তে ইমরানের দলের নেতা শাহবাজ গিল সামরিক বাহিনীর বেআইনি নির্দেশ অমান্য করতে অফিসার ও সৈনিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। এ কারণে তিনি বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে অভিযুক্ত হন, পাকিস্তানের আইনানুযায়ী তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। এরপরই টেলিভিশনটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গিলকে আটকাবস্থায় পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন ইমরান খান। পুলিশ বলছে, গিলকে আটকাবস্থায় নির্যাতন করা হয়নি, তিনি অ্যাজমায় আক্রান্ত।