সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিষণ্ণতা। সেইসাথে বাড়ছে আত্মহত্যার পরিমাণ। সম্প্রতি ‘সরকারি নীতি এবং শিক্ষা’ সংস্থার এক গবেষণায় জানা গেছে যে, তরুণ যুবকদের মধ্যে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বেশি ব্যবহার করে তাদের ৬ মাসের মধ্যে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
আর্কান্সাস বিশবিদ্যালয়ের ডক্টরেট ছাত্রী রিনি মেরিলের ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার, ব্যক্তিত্বের গঠন এবং হতাশাগ্রস্ত হওয়ার মধ্যকার সম্পর্ক’ গবেষণাটি ‘’এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার রিপোর্ট নামক এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তার সাথে আরো ছিলেন অর্গোন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড হিউম্যান সায়েন্স কলেজের ডীন ব্রিয়্যান প্রিম্যাক এবং আলবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব ইডুকেশন এর সহকারী প্রফেসর চুনহুয়া চাওন।
তারা বলেন, ‘বিগত গবেষণাগুলোতে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার এবং হতাশাগ্রস্ত হওয়ার সাথে কিভাবে সংযুক্ত তা সেসব গবেষণাগুলোতে তুলে ধরা হয়নি। এই গবেষণাটিতে আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তুলে ধরেছি’।
গবেষণায় উঠে এসেছে যে, হতাশাগ্রস্ত হওয়ার প্রবণতা সহজেই সম্মতি প্রদান করা কিংবা বিতর্ক থেকে দূরে থাকা মানুষদের মধ্যে প্রায় ৪৯% কম। এছাড়াও প্রতিদিন ৩০০ মিনিটের বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাটানো ব্যবহারকারীদের মধ্যে যাদের উচ্চ স্নায়ুবিকতা রয়েছে তাদের বিষন্ন হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রতিটি ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বিষণ্নতার বিকাশের সাথে দৃঢ়ভাবে যুক্ত।
প্রিম্যাক ও তাঁর সহকর্মীরা গবেষণাটি পরিচালনার জন্য ২০১৮ সালে পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ থেকে ৩০ বছরের ১০০০ জন আমেরিকান যুবকের তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
বিষণ্নতা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের হার এবং ব্যক্তিত্বের বিষয়ে জানার জন্য অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রশ্ন, দিনে কত ঘণ্টা তারা জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করেন এবং ৫টি বড় ইনভেন্টরি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছে।
গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অসম সামাজিক তুলনাগুলো অন্যদের নেতিবাচক অনুভূতিগুলো বাড়িয়ে দিতে পারে। এর দ্বারাই আমরা বুঝতে পারি যে বাড়তি সামাজিক যোগাযোগা মাধ্যমের ব্যবহার বিষণ্নতা বাড়ানোর জন্য কতটা ঝুকিপূর্ণ। প্রাথমিকভাবে, যেকোনো নেতিবাচক কনটেন্টে যুক্ত হলেও এ ধরনের অনুভূতি বাড়তে পারে। সবশেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব বেশি সময় দিলে মানুষের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ এবং বাড়ির বাইরে কাজকর্মের ক্ষেত্র অনেক কমে যায়।