আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যা কিছুই বলুক, শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে আসবে।
তিনি বলেন, এরইমধ্যে তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। কোথায় কত টাকা-পয়সা তারা দেবে, সবকিছুর খোঁজখবর আমাদের কাছে আছে। টাকার উৎসও আমরা জানি। শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে আসবে।
বুধবার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, তাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য সরকার পরিবর্তন। বৈশ্বিক কারণে দেশ যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা থেকে উত্তরণ তাদের লক্ষ্য না। তাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া। সেই পরিবর্তন কেবল নির্বাচনের মধ্য দিয়েই হবে। আগামী বছরের ২৩ ডিসেম্বর কিংবা ২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে বলে নির্বাচন কমিশন আভাস দিয়েছে।
কাদের বলেন, এরমধ্যে আফ্রিকার দেশগুলোতে ক্ষুধার সংকট দেখা দিয়েছে। আজকে দেখুন সোমালিয়ায় প্রতি ৩৬ সেকেন্ডে একজন লোক মারা যাচ্ছে। কিন্তু সেখানে তো সরকার পতনের আন্দোলন হচ্ছে না। সেখানেও বিরোধীদল আছে। তারা সবাই জনমানুষের সমস্যা দূর করতে চায়। এটি তাদের অভিন্ন উদ্দেশ্য। কিন্তু বিএনপির সবকিছু তাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট। তারা বলছে, সরকারকে পালাতে হবে, কেউ বলে লালকার্ড দেখাতে হবে। এসব তারা করছে, সরকার পতনের জন্য।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন চায়। তাদের শর্ত সেটা হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন। অথচ যেটার কোনও অস্তিত্ব নেই। যেটা আদালত নাকচ করে দিয়েছে। কাজেই নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীন। এটি কোনো আজিজ মার্কা কমিশন না। এটির আইনগত ভিত্তি আছে। ভুলত্রুটি থাকলে তা দূর করে তারা ভবিষ্যতে আরও পারফেক্ট হবে। এই কমিশনের অধীন নির্বাচনে অংশ নেয়ার আপত্তির কোনও কারণ দেখছি না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতুর পর ১০০টি সেতুর উদ্বোধন একটি ঐতিহাসিক কাজ। এ রকম আর কোথাও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। একসঙ্গে ১০০ সেতুর উদ্বোধনের রেকর্ড না থাকলেও আমরা তা করে দেখিয়েছি। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রদর্শিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা দেখেছি।
আগামী ২৪ ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল জাঁকজমকের মধ্য দিয়ে হবে না বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমাদের দলের জাতীয় কাউন্সিল একদিনেই হবে। তবে এবারে জাঁকজমক সাজসজ্জা কম হবে। বৈশ্বিক সংকটের কারণে আমরা কৃচ্ছ্র সাধন করতে
গঠনতন্ত্রে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কমিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ নিয়ে সরকার কী ভাবছে প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈশ্বিক সংকট আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব ফেলছে। রিজার্ভে চাপ তৈরি হয়েছে। দ্রব্যমূল বেড়ে গেছে। শান্তি কথাটা মুখে যতো সহজে বলি, বাস্তবে তা আসলে সত্যিই কঠিন। এখন আবার কী পরিস্থিতি দাঁড়ায়, মার্কিন সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনের ফল অনেকটা বোঝা যাচ্ছে। এরপর বিশ্ব রাজনীতিতে একটা পরিবর্তন আসবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট চাইলে তো সবকিছু করতে পারবেন না, কংগ্রেসের দুটো কক্ষই যদি তার বিরুদ্ধে থাকে। প্রেসিডেন্টের একটি পকেট ভেটো আছে। সেটা দিয়ে তো আর সবকিছু চলবে না।
তিনি আরও বলেন, এটা খুব সংকটের বিষয়। এটার একটি প্রতিফলন বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতিতে পড়বে। যুদ্ধের ব্যাপারেও এখানে একটা প্রতিফলন থাকবে। কারণ বাইডেনের যে কৌশল, বিপাবলিকানদের সেটা না। আমাদের এখানে ডলারের সংকট রয়েছে। রিজার্ভের ওপর চাপ রয়েছে। এ সময়টাতে আমাদের টাকার দরকার। আইএমএফ ঋণ আমরা গ্রহণ করবো। তবে কঠিন শর্ত আমরা মেনে নেব না। সম্ভবত। টাকার জন্য আমরা খুব কঠিন শর্ত আমরা মেনে নেব না। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, কথাবার্তা চলছে। যেটা যৌক্তিক, সেটাই হবে। অর্থ আমরা নেব, তবে কঠিন শর্তে না।
পাটার হওয়া টাকা উদ্ধারের পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার এটার খোঁজ-খবর নিচ্ছে। পাচার হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাচার হলে কোথায় করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।