চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ দিয়ে আগামী জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে যান চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
তিনি বলেন, টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজ সমাপ্ত হয়েছে। প্রথম টিউবের কাজের সমাপ্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করার জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন। সেই অবকাঠামো উন্নয়নের চূড়ান্ত মাইলফলক কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। প্রধানমন্ত্রী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছেন। সেখানে দেশীয় বিনিয়োগ আছে, বিদেশি বিনিয়োগও আছে। দেশীয় উৎপাদন বাংলাদেশ সর্বত্র ছড়িয়ে যাবে, ঠিক বিদেশেও ছড়িয়ে যাবে। সেজন্য দরকার হচ্ছে আমাদের রাস্তাঘাট, ব্রিজ এবং বন্দর। মাতারবাড়ির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক আছে। এ টানেলের কারণে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার ৪০ কিলোমিটার রাস্তা কমে যাবে। সময় বাঁচবে, যোগাযোগ দ্রুত হবে। যারা কাজ করে তাদের সময় বাঁচা মানে খরচ কমে যাওয়া। এই টানেল বাংলাদেশের বিশাল অর্জন।
টানেল দিয়ে আগামী জানুয়ারি থেকে যান চলাচলের আশা প্রকাশ করে মুখ্যসচিব বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রধানমন্ত্রী শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন। আমাদের অর্থনৈতিক শক্তিটা এতোই মজবুত যে, কোনোভাবে সেটাকে টলানো সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আইএমএফ দল এসে প্রতিটি সেক্টর পর্যালোচনা করে দেখেছে, যদি মার্কিংয়ের হিসেব করা হয় তাহলে বাংলাদেশ পেয়েছে এ প্লাস। এই যে এ প্লাস পেয়েছে এটা কিন্তু এক দিনে হয়নি। বিভিন্ন নীতি, পদ্ধতি এবং উন্নয়নমূলক কাজের ফলাফলের হিসেবে সেটা হয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হচ্ছি। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার জন্য যেসব নীতি, কৌশল নেওয়ার কথা সেটা ইতিমধ্যে প্রণীত হয়েছে। আইএমএফের দল সেটি দেখে ইমপ্রেস হয়েছে।
তিনি বলেন, এই যে স্টেপ বাই স্টেপ এগিয়ে যাওয়া, তার একটা নবদিগন্ত বা নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে কর্ণফুলী টানেল। আমি আজ টিউবের মাঝখান দিয়ে এসেছি। একটু আগে শাহ আমানত ব্রিজ পার হয়েছিলাম। সারা জীবন আমাদের কল্পনা ছিল নদী পার হতে হলে উপর দিয়ে যেতে হবে, নৌকা দিয়ে যেতে হবে, না হলে একটা ব্রিজ দিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মিত হচ্ছে। আমার বাড়ি পটিয়া, সেখান থেকে কর্ণফুলী টানেল দিয়ে এসেছি। এটা গর্ব করার মতো একটা বিষয়!
এ সময় সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন, টানেলের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।