নোয়াখালীতে এক ছাত্রলীগ নেতার মারধরের শিকার হয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতা। ঘটনাটি ঘটে চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নে।
অভিযোগ উঠেছে,খিলপাড়ার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফাকে (৫৮) তুলে নিজের অফিসে নিয়ে মারধর করেছেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের খিলপাড়া বাজারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সালাউদ্দিন সুমনের ব্যক্তিগত অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.মীর হোসাইন জানান, চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো.জাহাঙ্গীর আলম কম্বল বিতরণের জন্য খিলপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদককে তথ্য সংগ্রহ করে স্লিপ করতে বলেন। আগামী সোমবার এসব কম্বল বিতরণ করা হবে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীর মাঝে এসব কম্বল বিতরণের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে স্লিপ তৈরি করছিলেন। এ নিয়ে খিলপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সুমন ক্ষুদ্ধ হয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফাকে প্রশ্ন করেন তাকে না জানিয়ে কেন কম্বলের স্লিপ তৈরি করা হচ্ছে। জবাবে তিনি বলেন, তুমি বর্তমানে দলের কোনো দায়িত্বে নেই। তোমাকে কেন জিজ্ঞেস করব।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও জানান, কম্বলের স্লিপ নিয়ে বাগবিতণ্ডার জের ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার খিলপাড়া বাজার থেকে সুমন তার দুই অনুসারী দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফাকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে যায় তার ব্যক্তিগত অফিসে। সেখানে সুমন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফাকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করতে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে সুমন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফাকে চড়, থাপ্পড় দিয়ে বুকে লাথি মারে এবং বেধড়ক মারধর করে। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে শুক্রবার সকালে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মীর হোসাইন আরও বলেন, আমি স্থানীয় এমপিসহ বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছি। এ ঘটনার উপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগেও অভিযুক্ত ওই যুবক বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়াম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমনসহ কয়েকজন অন্যায়ভাবে আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধর করেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুমন বর্তমানে কোনো দলীয় দায়িত্বে নেই। ১০-১২ বছর আগে খিলপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। এমপি সাহেব তাকে গাইড করেন।
চাটখিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু জাফর বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।