দুর্নীতির মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। একইসঙ্গে তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ৭ বছরের কারাদাণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের একটি আদালত শুক্রবার পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে একটি দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং ইমরান খানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচারক নাসির জাভেদ রানা সাজা ঘোষণা করে বলেন, ‘প্রসিকিউশন তার মামলার অভিযোগ প্রমাণ করেছে। ইমরান খান দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।’
এএফপি প্রতিবেদনে জানায়, রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে যেখানে ইমরান খানকে বন্দি রাখা হয়েছে সেই কারাগারে দুর্নীতিবিরোধী আদালত বসানো হয়েছিল এবং তারা আল-কাদির ট্রাস্ট নামে একটি কল্যাণ ফাউন্ডেশনের জন্য ইমরান-বুশরা দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন ইমরান খান এবং তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০০টি মামলা রয়েছে।
রাজধানীর হাজারীবাগ বাজারের একটি ট্যানারির গোডাউনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার লিমা খানম।
তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে হাজারীবাগ বাজারে একটি ট্যানারির গোডাউনে আগুনের সূত্রপাতের খবর আসে। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ঘটনাস্থলে যাচ্ছে আরও ৩টি ইউনিট।
তিনি আরও জানান, চারতলা ভবনের চতুর্থ তলায় লেদারের গোডাউনে আগুন লেগেছে।
প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও হতাহতের কোনো খবর জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
বগুড়ায় ছিনতাইয়ের ঘটনা পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামি শাহাদত হোসেন ওরফে কলম (৩০) নামের এক ছিনতাই হাতকড়াসহ পালিয়েছে। বগুড়ায় বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনিতে আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিলো।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা দেড়টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশের হেফাজত থেকে তিনি পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়া আসামি আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম চৌধুরীপাড়ার খোকা মিয়ার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে জয়পুরহাটের তিলকপুর বাজারের এক ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীর টাকাসহ ব্যাগ ছিনতাই করে মোটরসাইকেলে করে পালাচ্ছিলেন দুজন। এ সময় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার আমইল গ্রামে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে শাহাদত হোসেন এবং তাঁর সহযোগী রাজু পালোয়ানকে আটক করে পিটুনি দেয় জনতা। এ ছাড়া আরেক সহযোগী বাঁধনকেও (২৬) জনতা আটক করে। একপর্যায়ে তিনজনকে পিটুনির পর রাজুর পায়ের রগ কর্তনেরও চেষ্টা করা হয়। পরে পুলিশ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আহত রাজু পালোয়ান, শাহাদত হোসেন ও বাঁধন আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে রাজু ও শাহাদতকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে এবং বাঁধনকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, পুলিশ হেফাজতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই ছিনতাইকারীর চিকিৎসা চলছিল। পুলিশ লাইনসের একজন এসআই এবং দুজন কনস্টেবল তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। এর মধ্যে বেলা দেড়টার দিকে হাতকড়া পরা অবস্থায় শাহাদত নামের একজন ছিনতাইকারী শৌচাগারে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে পালিয়ে গেছেন। তাঁকে আটকের জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে চিরুনি অভিযান চলছে।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি এনজিওর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের নামে হতদরিদ্র নারীদের মাঝে গাভীর বাছুর বিতরণ করার কথা বলে তাদের ডেকে এনে শুধু ফটোসেশন করা হয়েছে এবং খিচুড়ি খাইয়ে বিদায় করা হয়েছে, অথচ কোনো বাছুর তাদের দেওয়া হয়নি।
এনজিওটির আওতায় চলমান প্রকল্পের নাম “হতদরিদ্রদের মাঝে উন্নতজাতের গাভীর বাছুর বিতরণ”। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ লাখ টাকা এবং সুফলভোগী হিসেবে ১০ জন দুস্থ নারীকে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে, তাদের গাভীর বাছুর দেওয়া হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বাস্তবে তাদের হাতে শুধু বাছুর ধরিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। এরপর গরুগুলো আবার খামারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নারীরা অভিযোগ করছেন, প্রকল্পের আওতায় তাদের কোনো গাভীর বাছুর দেওয়া হয়নি। ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) আর্থিক সহায়তায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা এই ১০ জন নারীকে রেলবাজারে নিয়ে আসে। এখানে তাদের একটি খামার থেকে ১০টি গাভীর বাছুর নিয়ে আসেন এনজিওর নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু। এরপর নারীদের দাঁড় করিয়ে ফটোসেশন করা হয় এবং খিচুড়ি ও ডিম খাইয়ে বিদায় করা হয়। পরবর্তীতে, বাছুরগুলো একই গাড়িতে করে খামারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নারীদের মধ্যে খুশি খাতুন, যিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান, বলেন, “আমাদের গাভী দেওয়ার কথা বলে ট্রেনিং এ ডেকে নিয়ে আসছে। গাভীর বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলে, কিন্তু গাভী দেয়নি। বলছে, পরেরবার দেব।” এর আগে, তাকে একটি ছাগল দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তার জন্য ১৩০০ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অন্য এক গৃহবধূ বলেন, “বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলার পর আমাদের শুধু খিচুড়ি ও ডিম খাওয়ানো হয়েছে। কিন্তু গাভী দেয়নি। আমাদের বলা হয়েছিল, পরে দেওয়া হবে। এখনো পাইনি।”
গরুর বাছুর নিয়ে ঘটিত এই ঘটনা সম্পর্কে গাড়িচালক শুভ দাস বলেন, “আমার গাড়িতে ১০টি বাছুর নিয়ে রেলবাজারে গিয়েছিলাম, কিন্তু পরে সব বাছুর আবার একই খামারে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না।”
এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, “১০ জন নারীকে গাভীর বাছুর দেওয়া হয়েছে এবং বাকিদের পরের প্রকল্পে দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।”
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী জানান, তিনি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না, তবে প্রকল্পের ব্যাপারে বিস্তারিত জানেন না। তিনি বলেন, “আমি এখনও প্রকল্পের রিপোর্ট হাতে পাইনি। যদি কোনো অনিয়ম হয়, তবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) উপ-মহাব্যবস্থাপক (কর্মসূচি) মোস্তফা কামাল ভূঞা বলেন, “এই প্রকল্পের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কার্যক্রম সন্তোষজনক হলে বাকি ২ লাখ টাকা দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “প্রকল্পের রিপোর্ট ইউএনও থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে জমা দেওয়া হবে এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এদিকে, সচেতন মহলের অভিযোগ, প্রকল্পের নামে এনজিওগুলো ফটোসেশন করে টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনা নতুন নয়। এখানেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয়রা ধারণা করছেন, গণমাধ্যমে বিষয়টি সামনে আসার পর নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু দুস্থ নারীদের গাভীর বাছুর দেওয়ার চেষ্টা করবেন, তবে প্রকল্পের পুরো টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টা যে হয়েছে, তা স্পষ্ট।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির মতবিনিময় সভায় হট্টগোল ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিবিরের ইন্ধনের অভিযোগ তুলেছেন জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর। এ অবস্থায় সভাটি স্থগিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে এ সভা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সভার আয়োজন করা হয়। তবে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা পদের দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে সভাস্থল ত্যাগ করেন। তারা কমিটিতে ছাত্রলীগ ও শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলেন।
এরপর তারা কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে গিয়ে জড়ো হন এবং কিছুক্ষণ পরে আবার সভাস্থলে ফিরে আসেন। এ সময় সভাস্থলে থাকা পদধারী নেতাকর্মীরাও পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। উভয়পক্ষের স্লোগানে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মিলনায়তনের লাইট বন্ধ করে জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম এসে বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। সবাই যেন সহাবস্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালায়, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের সময় তারা ঝুঁকি নিয়ে দলীয় কার্যক্রম চালিয়েছেন। কিন্তু নবগঠিত কমিটিতে তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাদের মতে, ছাত্রলীগ ও শিবির সংশ্লিষ্ট অনেককেই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।
পদবঞ্চিত নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, “এই কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যাদের ত্যাগ ছিল, তাদের কোনো মূল্যায়ন হয়নি। বরং বিতর্কিত লোকজন এবং নতুন করে রাজনীতিতে আসা ব্যক্তিদের পদ দেওয়া হয়েছে।”
ছাত্রদল আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর দাবি করেন, “আমরা ধারণা করছি, শিবিরের ইন্ধনে এ সভা বানচালের চেষ্টা হয়েছে। পদবঞ্চিতদের মধ্যে না পাওয়ার ক্ষোভ থাকতে পারে, তবে তৃতীয় কোনো শক্তি এ ঘটনায় ইন্ধন দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, কেউ যদি ছাত্রলীগ বা শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান, তাহলে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হবে।”
রাত ৯টার দিকে ছাত্রদলের ভাঙচুর ও ক্যাম্পাসে অছাত্রদের মাধ্যমে সহিংসতা তৈরির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখা। তাদের দাবি, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে।
জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের নতুন আহবায়ক কমিটির প্রথম মতবিনিময় সভায় দুই গ্রুপের উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।
দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ’বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির সঙ্গে ছাত্রদলের পদধারী যারা ছিলেন তারা বিকেল সাড়ে চারটায় জহির রায়হান মিলনায়তনে মতবিনিময় শুরু করেন। মত বিনিময় শুরুর পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা ও ৪০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের মার্যুক এবং সেলিম রেজাসহ প্রায় ৩০-৪০ জনের একটি গ্রুপ এসে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এসময় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। পরে জহির রায়হান মিলনায়তনের জানালার কাঁচ, চেয়ার ও দরজা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সভা স্থগিতের ঘোষণা দেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর।’
এসময় ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাদের ’ছাত্রলীগের কমিটি মানি না, মানবো না,’ ’শিবিরের কমিটি মানি না, মানবো না’ ’পদবঞ্চিতদের অধিকার দিতে হবে’ ’আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এবিষয়ে পদবঞ্চিত নেতা আব্দুল কাদের মার্যুক বলেন, ’আমরা দীর্ঘদিন যাবত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে এসেছি। কিন্তু আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ব্যক্তিকে পদ দেয়া হয়েছে। আমরা যারা নিপীড়নের শিকার ও নির্যাতিত তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা এই পকেট কমিটি মানি না, আমরা তারেক রহমানের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ’আমরা সবাইকে কাজ করতে চাই। আজকে আহ্বায়ক কমিটির প্রথম মতবিনিময় সভা ছিল কিন্তু এই সভায় তৃতীয় কোন পক্ষ এসে অপ্রিতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেছে। আহ্বায়ক কমিটির কারো বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অকাট্য প্রমাণ থাকলে আমরা তাদের অব্যাহতি দিয়ে দিবো।’
পদবঞ্চিতদের বিষয়ে তিনি বলেন, ’যারা দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছে তাদের না পাওয়ার বেদনা আমরা বুঝি। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। যারা এক্টিভ ছিল কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ’আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল দল সহনশীল আচরণ করুক এবং তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত না হয়। এছাড়া আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যারা আমাদের রেগুলার শিক্ষার্থী তারাই রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করুক।’
এডটেক প্ল্যাটফর্ম ‘টেন মিনিট স্কুল’ সরকারি উদ্যোগে আবারও নিজেদের বিনিয়োগ ফিরে পেয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। আগের আওয়ামী লীগ সরকার এটি বাতিল করেছিল।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী স্টার্টআপ বাংলাদেশ ৫ কোটি টাকা দুই ধাপে ছাড় করবে। প্রথম ধাপে আড়াই কোটি টাকা ইতিমধ্যে ছাড় করা হয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘টেন মিনিট স্কুলে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত কখনোই বাতিল হয়নি। বিশেষ পরিস্থিতিতে গত জুলাইয়ে এই বিনিয়োগ স্থগিত করা হয়েছিল।’
‘তবে এ ধরনের একটি সম্ভাবনাময় স্টার্টআপে বিনিয়োগ না করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তাই আগের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে’, যোগ করেন ওই কর্মকর্তা।
আয়মান সাদিক ২০১৫ সালে টেন মিনিট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষামূলক কনটেন্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আয়মান সাদিকের প্রকাশ্য সমর্থনের কারণে তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক টেন মিনিট স্কুলের বিনিয়োগ বাতিল করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র ঐক্যবদ্ধভাবে দেওয়া গেলে সবার মনে সাহসের সঞ্চার হবে এবং দেশ চমকে উঠবে। অন্যথায় এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তাহলে ঘোষণাপত্র দেওয়ার আর দরকার নেই।
প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের উদ্দেশে বলেন, আমরা কাজ করার সময় দেখি একা পড়ে গেছি। তখন নিজেদের দুর্বল মনে হয়। আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে মনে সাহস পাই। এই একতার মধ্যেই আমাদের জন্ম ও একতাই আমাদের শক্তি।
ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হঠাৎ ছাত্ররা এসে ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বলল। তখন আমি সবাইকে নিয়ে ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বললাম। কারণ এর জন্য ৫ আগস্টকে রিক্রিয়েট করতে হবে। আর সবাইকে ছাড়া তা সম্ভব নয়। অন্যথায় ৫ আগস্টকে অবমাননা করা হবে। ছাত্ররা আমার এই কথায় খুশি হয়নি। যদিও পরে তারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। এরপর থেকেই একসঙ্গে কিভাবে এটি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
‘সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণাপত্র দেওয়া গেলে দেশের জন্য ভালো হবে। এছাড়া আন্তজার্তিকভাবেও এটি অনেক গুরুত্ববহণ করবে। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে দেশবাসী ও বিশ্বকে আমরা ঐক্যের বার্তা দিতে চাই’, যোগ করেন ড. ইউনূস।
গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় রাজধানীর উত্তরায় এলাকায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ নিয়ে মুগ্ধর জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, পুলিশের গুলিতে মুগ্ধর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসে অভিযোগ দায়ের শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
স্নিগ্ধ বলেন, মুগ্ধ গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে একটা বিতর্ক ছিল। যে গুলিটা পুলিশের মধ্যে থেকে করা হয়েছে নাকি বাইরের কারো থেকে করানো হয়েছে। অথবা স্নাইপার থেকে করা হয়েছে কিনা। তবে আমাদেরকে কাছে যে প্রমাণাদি আছে, তার মাধ্যমে আমরা বলতে পারি পুলিশের পক্ষ থেকে এ গুলি চালানো হয়েছে। আমরা যে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি সেখানে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের গুলিতেই মুগ্ধের জীবন গেছে।
মুগ্ধের বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসেছি মুগ্ধের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করার জন্য। সে ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। সন্তান হারিয়ে বিগত ছয় মাসে আমাদের বাবা-মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল মা-বাবাকে স্বাভাবিক জীবন-যাপনের ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অনেক কিছুর কারণে ও প্রেসারাইজ সিচুয়েশন যেমন অন্যান্য ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানুষদের কারণে তারা এখন পর্যন্ত সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপনে আসতে পারছেন না। এটা আমাদের একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, এ ছয় মাসে হত্যাকাণ্ডের বিষয় যতটুকু প্রমাণ বের করা সম্ভব তা আমরা নিজ উদ্যোগেই বের করেছি। যেহেতু প্রথম দিকে প্রশাসন পুরোপুরি অকার্যকর অবস্থা ছিল, তাই আমরা নিজ উদ্যোগে এই কাজ করেছি। আমাদের সব ধরনের ভিডিও ফুটেজ, সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুগ্ধের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যে ভিডিও তা পুরোটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। তার হত্যাকাণ্ডের যেহেতু ভিডিও ফুটেজ আছে, তার বিচারের বিষয়ে সেটা আমরা সরকারের কাছে আশা করতেই পারি। কিন্তু এই ফুটেজ কালেক্ট করা আমাদের দায়িত্ব ছিল না, এটা প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল। যেহেতু এটা নিজ উদ্যোগে করেছি, তাই আমাদের এখন আশা থাকবে ভিডিওটিকে ফরেনসিকের মাধ্যমে তাদের চেহারা কে পরিষ্কার করে, একজন একজন করে আসামিদেরকে নিয়ে এসে এক সুষ্ঠু বিচার কার্য করবে। আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য শুধু মাত্র ন্যায়বিচার পাওয়া।
দীপ্ত বলেন, আমরা ট্রাইবুনালে অভিযোগ করেছি মুগ্ধের পুরো ঘটনাটার উপর। চিত্র প্রসিকিউটরও আমাদের এ বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। আমরা প্রাথমিক অভিযোগে কোনো নাম দেইনি। তারাই এটিকে নিয়ে তদন্ত করবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণাদিসহ ক্রমান্বয়ে যে নামগুলো আসবে। এই প্রাণঘাতী অস্ত্র কে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে এই সবসহ একে একে নামগুলো আসবে। যে কারণে আমাদের অভিযোগে কোনো নাম দেইনি আমরা। আমরা আশা রাখছি এই সরকার এবং ট্রাইবুনাল আমাদের আশা পূরণ করতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সুপেরিয়র হিসাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর এর দায়ভার যায়, যা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় তথ্য প্রমাণের কারণে সেই পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব হয় না। বিচারকার্যে প্রমাণাদি হচ্ছে সবচেয়ে মুখ্য বিষয়। তাই কোনো এভিডেন্স ছাড়া যদি আমরা সেই প্রক্রিয়ায় যাই, তাহলে বিচারকার্য বাধাগ্রস্ত হতে পারে। আমরা চাই না এ বিচারকার্য বাধাগ্রস্ত হোক। আমরা যাতে ন্যায় বিচার পাই সেজন্যই আমরা এভাবে চেয়েছি।
১৮ জুলাই মুগ্ধের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বড় ভাই দীপ্ত বলেন, মুগ্ধ যেখানে মারা যায় তার ১০ কদম দূরেই হাসপাতাল ছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে স্পট ডেড ঘোষণা করেন। সেখানে আমাদের পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। তখন হাসপাতালে ডাক্তাররা আমাদেরকে বারবার বলছিল লাশ দিয়ে যাওয়ার জন্য। কারণ পুলিশ আসার পরবর্তীতে আমরা লাশ নাও পেতে পারি। পরে সেখান থেকে ডের্থ সার্টিফিকেট নিয়ে আমরা দ্রুত বাসায় লাশ নিয়ে যাই।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের নামে থাকা ১৩ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নিজের ভেরিফায়েড পেজে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তার পোস্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ থেকে পরির্তন করে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুরের মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শরীয়রতপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এর নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ নাম দেওয়া হয়েছে। জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সরকার।
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিনেইম ইউনিভার্সিটির নাম মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ করা হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির মন্ত্রী ও বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। এবার তাকে দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যা দিলেন আলোচিত মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক।
স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে (সাবেক টুইটার) এই প্রতিক্রিয়া দেন ইলন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক্সে মারিও নাউফালের টিউলিপকে নিয়ে লেখা একটি টুইট শেয়ার করেন ইলন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘লেবার পার্টির শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শিশু নিগ্রহকারীদের নিরাপত্তা দেয়, আর দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিবাজ।’
যদিও টিউলিপ সিদ্দিক সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, সরকারকে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি থেকে দূরে রাখতে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তবে সমালোচকরা টিউলিপ ও তার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্পত্তি এবং বাংলাদেশি অবকাঠামো প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার দ্রুত টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এমা রেনল্ডসকে নিয়োগ দিয়েছেন।
দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের পর সব মামলায় খালাস পাওয়ায় অবশেষে কারামুক্ত হয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর পোনে ২ টায় তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়েছেন।
ডিআইজি প্রিজন্স-ঢাকা বিভাগ মো. জাহাঙ্গীর কবির গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দায় থেকে খালাস পান লুৎফুজ্জামান বাবর। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। এ রায়ের মাধ্যমে বাবর তার বিরুদ্ধে করা সব মামলা থেকে খালাস পান। ফলে বাবরের কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
এদিকে বাবরের মুক্তির খবরে এলাকা থেকে দলে দলে লোকজন ঢাকায় এসেছেন। নেতার মুক্তির অপেক্ষায় কারাগারের সামনে অবস্থান করেছেন স্বজন ও হাজার হাজার নেতাকর্মী। কারামুক্তির পর কারা ফটক থেকে তাকে বরণ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয় এবং একটিতে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতন হওয়ার পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর।
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র তৈরির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ নেবে না—এখন পর্যন্ত এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, বিএনপি বৈঠকে অংশ নেবে না- এমন কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি জানি না। বিএনপি বৈঠকে যোগ দিচ্ছে না এমন কথাও আমি বলি নাই। দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানাতে বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যাবেন আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আজ (বৃহস্পতিবার) সর্বদলীয় বৈঠক করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিকেল ৪টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হবে। যা চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) প্রথম আক্রান্ত নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত এই নারীর নাম সানজিদা আক্তার, বয়স ৩০। মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার কিডনি জটিলতাসহ আরও অন্যান্য সমস্যা ছিলো বলেও জানা গেছে।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরিফুল বাশার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ওই নারী গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় মারা গেছেন। দেশে এইচএমপিভি শনাক্ত হওয়া কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য এটিই প্রথম। তবে তিনি যে এইচএমপিভি ভাইরাসের জন্যই মারা গেছেন, এমনটি বলা যাবে না। ওনার অন্য আরও শারীরিক জটিলতা ছিল, যার জন্য হঠাৎ করেই শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
এই নারীর কী কী জটিলতা ছিল জানতে চাইলে হাসপাতাল তত্বাবধায়ক বলেন, তিনি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া তার কিডনি সমস্যা ছিল, সেইসাথে তিনি অনেক মোটা ছিলেন, যে কারণে তাকে ভেন্টিলেটরে ওঠানো যাচ্ছিল না। ভাইরাল নিউমোনিয়ার জন্যও সম্ভবত মারা যাননি, অনেকটা সুস্থও হয়ে গেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী জটিলতার জন্য হয়তো সমস্যা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডেথ রিভিউ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বজনরা ইতোমধ্যে লাশ নিয়ে গেছেন। তারপরও এটা নিয়ে অধিদপ্তর অথবা মন্ত্রণালয় ব্রিফ করবে। সেই আলোকে আমরা পরবর্তী পরিকল্পনা করবো।
গত ১২ জানুয়ারি এই নারীর এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। ওই নারীর বিদেশ সফরের কোনো ইতিহাস ছিল না। তখন জানা যায় ওই নারীর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই নারী এইচএমপিভিতে আক্রান্তের পাশাপাশি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন গত ১২ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন, এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় দেশে। এটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আরও আগে থেকেই আমরা পেয়েছি। কাজেই এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়।
দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের পর সব মামলায় খালাস পাওয়ায় আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে কারামুক্ত হচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পেতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে কারা অধিদপ্তর।
এদিকে বাবরের মুক্তির খবরে এলাকা থেকে দলে দলে লোকজন ঢাকায় এসেছেন। নেতার মুক্তির অপেক্ষায় কারাগারের সামনে অবস্থান করেছেন স্বজন ও নেতাকর্মীরা। কারামুক্তির পর কারা ফটক থেকে তাকে বরণ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
কারাগারের সামনে অপেক্ষারত এক নেতা বলেন, ‘আমাদের নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর নিরপরাধ। তার জনপ্রিয়তায় হিংসা থেকে শেখ হাসিনা তাকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছিল। তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।’
এর আগে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামে আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা পৃথক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দায় থেকে খালাস পান লুৎফুজ্জামান বাবর। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে। এ রায়ের মাধ্যমে বাবর তার বিরুদ্ধে করা সব মামলা থেকে খালাস পান। ফলে বাবরের কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয় এবং একটিতে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতন হওয়ার পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর।
অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে। তবে এই বৈঠকে বিএনপি অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এর আগে, বুধবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৈঠকের তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং থেকে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের ওপর একটি সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজন করবে।
এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সর্বদলীয় বৈঠকের কথা জানান।
মাহফুজ আলম বলেন, এই বৈঠকের ভেতর দিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি দলিল প্রণীত হবে। সেদিনই স্পষ্ট হবে, কবে ঘোষণাপত্রটি জারি করবো এবং সরকার কীভাবে ঘোষণাপত্র জারির করার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের একটি প্রেক্ষাপট-প্রত্যাশা এই ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হবে। সব রাজনৈতিক দল এবং পক্ষের মতামত নিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই ঘোষণাপত্র ঘোষিত হবে।
আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নিতে যাচ্ছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শপথ গ্রহণের ঠিক পাঁচ দিন আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির চুক্তিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। ১৫ মাসের মর্মান্তিক সহিংসতা এবং ৪৬ হাজারের অধিক প্রাণহানির পর এই যুদ্ধবিরতির পুরো কৃতিত্ব দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। চুক্তি ঘোষণার পর থেকে গাজা উপত্যাকায় হামলা চালিয়ে ৩০ ফিলিস্তিনি নাগরিককে হত্যা করা হয় বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সোশ্যাল ট্রুথে লিখেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে জিম্মিদের জন্য আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। জিম্মিরা শিগগিরই মুক্তি পাবে। ধন্যবাদ। আরেক পোস্টে ট্রাম্প এই চুক্তির পুরো কৃতিত্ব দাবি করেছেন।
নভেম্বরে ঐতিহাসিক জয়ের কারণে এই যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ১৫ মাসের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হামাস এবং ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে।
৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে চলমান যুদ্ধ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর এই চুক্তিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল, যার অন্যতম মধ্যস্থতাকারী ছিল কাতার।
এই চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে পৃথক বৈঠকের পর উভয় পক্ষ গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে”।
যুদ্ধবিরতির খবর জানার পর গাজায় ফিলিস্তিনিদের অনেককে রাস্তায় উল্লাস করতে দেখা গেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। এই সময়ে হামাস ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে।
প্রতিজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে ইসরায়েল বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না— এমন প্রস্তাব করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। সেই সঙ্গে সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের নয় পৃষ্ঠার সুপারিশ জমা দেয়। এতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে নিম্নরূপ সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী
(ক) সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সীমিত করা।
(খ) সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দুইবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করা।
(গ) একই ব্যক্তি একই সঙ্গে যেন দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা হতে না পারেন তার বিধান করা এবং দ্বৈত প্রতিনিধিত্বের সুযোগ বন্ধ করা।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন
(ক) দলনিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিধান করা।
(খ) জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার বিধান করা। কার্যকর সংসদের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংসদ সদস্যদের প্রত্যাহারের বিধান করা।
সংসদ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা
(ক) সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি, আবাসিক প্লট, সব ধরনের প্রটোকল ও ভাতা পর্যালোচনা ও সংশোধন করা।
(খ) একটি ‘সংসদ সদস্য আচরণ আইন’ প্রণয়নের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের বাৎসরিকভাবে সম্পদের হিসাব প্রদান এবং স্বার্থের দ্বন্দ্বের বিষয়সমূহ ঘোষণা করা।
(গ) সংবিধান লঙ্ঘন করে সংসদ সদস্যদের স্থানীয় উন্নয়নে জড়িত থাকার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আনোয়ার হোসেন বনাম বাংলাদেশ মামলার রায় কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা এবং ভবিষ্যতে সংসদ সদস্যদেরকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টার পদ থেকে অপসারণ করা।
(ঘ) সংসদ সদস্যদের জন্য বিশেষ প্রটোকলের অবসান করা।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ/গণমাধ্যম
(ক) নিশ্চল পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া, যাতে পর্যবেক্ষকরা সারাদিন কেন্দ্রে থাকতে পারে, কিন্তু ভোটকক্ষে সার্বক্ষণিকভাবে নয়।
(খ) নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে প্রাক-নির্বাচনকালীন পর্যবেক্ষণের অফিসিয়াল অনুমতি প্রদান করা।
(গ) পক্ষপাতদুষ্ট ভুয়া পর্যবেক্ষক নিয়োগ বন্ধ করা।
(ঘ) ব্যক্তি পর্যায়ে পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিধান চালু করা।
(ঙ) পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ভবিষ্যতে নির্বাচন ভালো করার জন্য কাজে লাগানোর বিধান করা।
(চ) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপগুলো সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক সংস্থার জন্য সুস্পষ্ট করা। সরকারের পরিবর্তে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া।
(ছ) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রদত্ত বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিকদের সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ, দিনে মোটরসাইকেল ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করা।
নির্বাচনী আচরণবিধি:
(ক) ব্যানার, তোরণ ও পোস্টারের পরিবর্তে লিফলেট, ভোটার-প্রার্থী মুখোমুখি অনুষ্ঠান, পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও সরকারি গণমাধ্যমে প্রচারের সম-সুযোগ প্রদানের বিধান করা।
(খ) সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ মেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার বিধান করা।
(গ) ১৯৯০ সালের তিনজোটের রূপরেখার মতো রাজনৈতিক দলের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন করা।
(ঘ) কমিশনের সুপারিশগুলো দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে অন্তবর্তী সরকার।
র্যাব পরিচয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সরোয়ার হোসেন খানের কিশোর ছেলের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দুই পুলিশ কনস্টেবল। ছেলের কাছে মাদক পাওয়া গেছে—এ দাবি করে তারা ওই এসআইয়ের কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে, ওই দুই কনস্টেবল তাদের বিকাশ নম্বরে ১০ হাজার টাকা নেন। যদিও আদালতে তারা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ৪ জানুয়ারি, উত্তরা পূর্ব থানার জসীমউদ্দীন সড়কে। সেখানে দুই পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান (২৭) ও সোহেল রানা (২৮) র্যাব পরিচয়ে এসআই সরোয়ার হোসেন খানের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ছেলেটির পকেট থেকে সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন তারা। পরে তার মুঠোফোন খুলে দেওয়ার জন্য বললেও, রাজি না হলে ফোনটি ভেঙে ফেলা হয়। এরপর ওই দুই ব্যক্তি এসআই সরোয়ারের কাছে ফোন করে দাবি করেন, তার ছেলের কাছে মাদক পাওয়া গেছে। যদি টাকা না দেওয়া হয়, তবে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন তারা।
বাধ্য হয়ে এসআই ওই দুই কনস্টেবলের বিকাশ নম্বরে ১০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর তার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মামলা দায়ের হওয়ার পর ৯ জানুয়ারি দুই কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে উত্তরা-পূর্ব থানার পুলিশ। ১০ জানুয়ারি, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস জানান, দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়ার পর তাদের থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ১৫ মাসের মর্মান্তিক সহিংসতার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ১৯ জানুয়ারি, রোববার থেকে কার্যকর হবে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হবে রোববার থেকে।” তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি সফল বাস্তবায়নের জন্য কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র একযোগে কাজ চালিয়ে যাবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই চুক্তি যুদ্ধের অবসান ঘটাবে এবং তার দেশ সেই লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা করতে থাকবে।
বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ১০টার কিছু আগে শেখ মোহাম্মদ এই চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার ঘোষণা দেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে এবং এর আওতায় ইসরায়েলি জিম্মি এবং ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এক পোস্টে এই চুক্তির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “মধ্যপ্রাচ্যে বন্দিদের জন্য আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। তারা শিগগিরই মুক্তি পাবেন। ধন্যবাদ।”
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও কাতারের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর এই চুক্তি সম্পর্কে কথা বলেন। তিনি জানান, শিগগিরই জিম্মিরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, যা থেকে ১,২১০ জন নিহত হন এবং ২৪১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৯৪ জন এখনও গাজায় বন্দী। অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৪৬ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এই ১৫ মাসের সংঘাতে যুদ্ধবিরতির জন্য একাধিক চেষ্টা হলেও তা সফল হয়নি, তবে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির চাপ বাড়তে থাকায় কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি সই হয়।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আল-থানি হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা আলাদা আলোচনা করে এই চুক্তি নিশ্চিত করেন।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গাজার বাসিন্দারা আনন্দে মেতে ওঠেন। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এবং অন্যান্য অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে উল্লাস করেন। অনেকেই এই মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখতে ছবি তুলতে থাকেন।