29 C
Dhaka
Wednesday, October 16, 2024

আওয়ামী লীগকে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ক্ষমতায় চায় না: বিবিসিকে প্রধানমন্ত্রী

- Advertisement -

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় চায় না তাই বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশে গত ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় দেশে অসাধারণ উন্নয়ন হয়েছে।

গত কয়েকদিন আগে যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির সাংবাদিক ইয়ালদা হাকিমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ, বিচার বর্হিভূত হত্যা, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র এবং রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অটোক্রেসি বা একনায়কতন্ত্রের যে ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করা হয়, সেটি নাকচ করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ১৪ বছর ধরেই শুধুমাত্র দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, তাই আমরা উন্নতি করতে পারছি।

বিবিসি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশের একটি বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন? এই প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, যে বাহিনীর ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের পরামর্শেই ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের সকল প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল। যেভাবে তারা বাহিনীটাকে তৈরি করেছে, তারা তো সেভাবেই কাজ করছে বলে আমার বিশ্বাস। তাহলে কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা দিল? এটা আমার কাছেও বিরাট এক প্রশ্ন।

এ সময় বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের কাছে ইয়ালদা হাকিম জানতে চান, তাহলে কেন তারা এটা করেছে বলে তিনি মনে করেন? জবাবে তিনি বলেন, আমি জানি না, হয়তো তারা আমার কাজ অব্যাহত থাকুক তা চায় না, আমি বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছি, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। এটা আমার অনুভূতি। একটা পর্যায়ে সন্ত্রাস সব দেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে আমরা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরপর মাত্র একটা ঘটনা ঘটেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ রাখতে কঠোর পরিশ্রম করেছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির আগে বাংলাদেশে বন্দুকযুদ্ধের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন বিবিসির ইয়ালদা হাকিম।

নিষেধাজ্ঞা জারির আগে ২০১৮ সালে ৪৬৬ মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৩৮৮ মানুষ এভাবে নিহত হয়েছে আর ২০২০ সালে নিহত হয়েছে ১৮৮ জন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পর এই সংখ্যা মাত্র ১৫ জনে নেমে এসেছে। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব নম্বর তারা উল্লেখ করেছে, সেগুলো তারা প্রমাণ করতে পারেনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করেনি। কারণ আমরা প্রমাণ চেয়েছিলাম, সেগুলো তারা পাঠিয়ে দিক, আমরা তদন্ত করে দেখবো।

জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচেভেলের একটি তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে, এই র‍্যাবের দুইজন ব্যক্তি গোপন তথ্য ফাঁস করে বলেছেন যে, এসব হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এসেছে।

এই তথ্য তুলে ধরা হলে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি না তারা কীভাবে এটা করেছে, কিন্তু আমেরিকায় কি ঘটছে, আপনি দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল, শপিং মল, রেস্তোরায় হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থীরা, সাধারণ মানুষ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে নিহত হচ্ছে। আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের নিজেদের ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া। তাদের দেশের কী অবস্থা? তাদের উচিত শিশুদের জীবন রক্ষা করা।

তিনি বলেন, তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা যেসব অভিযোগ করেছে, আমরা তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম। তারা দেয়নি।
আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা একটা খেলার মতো। এটা আমার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়, কেন তারা আমাদের দেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিল?

এ সময় নিজের পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, এই খুনিরা দায়মুক্তি পেয়েছিল। আমি এমনকি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি, আমার বিচার পাওয়ার কোন অধিকার ছিল না। সেই সময় তারা কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বরং একজন হত্যাকারী আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করেছি, তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য। তারা করেনি। কেন তারা শুনছে না, আমি জানি না।

বাংলাদেশের পার্লামেন্টে গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে বলেছেন, আমেরিকা বাংলাদেশের ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে চায়। এই বক্তব্যের পক্ষে কী প্রমাণ আছে? বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় শেখ হাসিনার কাছে।

তিনি বলেছেন, আমার কাছে একটা বড় প্রশ্ন হলো, কেন তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করলো? যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য কাজ করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তখন তারা লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যারা ভুক্তভোগী, তাদের পক্ষে নয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘ, সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে- এই তথ্য শেখ হাসিনাকে জানানো হলে তিনি বলেন, আমি জানি ১২টি প্রতিষ্ঠান মিলে এসব বক্তব্য দিয়েছে, কিন্তু তারা প্রমাণ করতে পারেনি। আমি জানি না কী আন্তর্জাতিক খেলা চলছে।

ইয়ালদা হাকিমের জানতে চান– কেন তারা আপনাকে সরাতে চাইবে? এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তারা আমার পিতাকে হত্যা করেছে। যারা আমার পরিবারকে হত্যা করেছে, এমনকি ১০ বছরের ভাইকে হত্যা করেছে, সেই ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না এই পরিবারের কেউ ক্ষমতায় আসুক।

বাংলাদেশের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সংবাদ মাধ্যমের ওপর চাপ তৈরি করা সম্পর্কে বিভিন্ন সময় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই বিষয়ে শেখ হাসিনার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলছেন, আমি জানি না, তারা যেসব অভিযোগ করছে, সেগুলো খুব বেশি প্রমাণ করতে পারেনি। কিছু গ্রুপ বড় বড় সংখ্যায় অভিযোগ করেছে, কিন্তু আমরা যখন তদন্ত করেছি, তখন আমরা পাঁচ ছয়জনের (হত্যা বা গুম) ব্যাপার দেখতে পেয়েছি।

আসলে কিছু মানুষ বিভিন্ন কারণে নিজেরাই লুকিয়ে ছিল। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আমরাও সমর্থন করি না। আমাদের দেশে আইন আছে, আমাদের আইন প্রয়োগকারীরা কোন অন্যায় করলে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হয়। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।

বিবিসির ইয়ালদা হাকিম শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান, যেভাবে ডয়েচেভেলের তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে, আসলেই কি সাংবাদিক, বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, অ্যাকটিভিস্টদের ওপর হামলার জন্য র‍্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল?

কারণ সরকারের তথ্যেই জানা গেছে, বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০ হাজারের মতো মামলা হয়েছে, সাত হাজারের বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে।

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, হ্যাঁ, কিন্তু তারা কী করেছিল? তারা মানুষ হত্যা করেছে, তারা মলোটভ ককটেল ছুড়েছে, তারা পাবলিক বাসে আগুন দিয়েছে। ৩৮০০ পাবলিক বাসের ভেতরে যাত্রীদের রেখেই আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে, ট্রেন, লঞ্চ, প্রাইভেটকারে আগুন দিয়েছে। আপনি হলে কি করতেন? আপনারা কি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতেন না?

এটা সাধারণ দলীয় সমর্থকদের ক্ষেত্রে করা হয়নি। যারা হত্যা করেছে, মানুষকে নির্যাতন করেছে, দুর্নীতি করেছে- এই জন্য তারা শাস্তি পেয়েছে। আমি বুঝতে পারি না, তারা যেসব অপরাধ করেছে, কেন এইসব (মানবাধিকার) সংগঠন সেটা দেখতে পাচ্ছে না, বলেছেন শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবাধিকার সংস্থাগুলো কখনো আমার মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেনি। যখন আমার পুরো পরিবারকে হারিয়েছে, তখনো তারা আমার পক্ষে কথা বলেনি। কেন?

বিবিসির সংবাদদাতা ইয়ালদা হাকিম জানতে চান, আমেরিকার কেউ কেউ মনে করেন, আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার আসল কারণ হলো, বাংলাদেশের মানবাধিকার অবস্থাকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা। এর জবাবে তিনি কি বলবেন? শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সবসময়েই মানবাধিকার রক্ষা করে আসছে। মানবাধিকার মানেই শুধু শরীরের নিরাপত্তা নয়। আমার কাছে মানবাধিকার মানে হলো তাদের নিরাপত্তা, খাদ্য, শিক্ষা, ভোট, সুস্থ থাকার অধিকার। সবকিছু আমরা রক্ষা করছি।

বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের বিরোধী নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, শেখ হাসিনা নির্বাচন কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখছে? জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, অবশ্যই না। নির্বাচন এবং ভোটাধিকারের জন্য আমি সারাজীবন ধরে সংগ্রাম করেছি, সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরাই আইন করেছি।

‘আমরা সবসময়েই চেয়েছি যেন মুক্ত ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয়। এখন আমাদের ভোটার লিস্ট ছবিসহ তৈরি করেছি, আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বক্সের ব্যবস্থা করেছি’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিশেষ পুলিশ র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

- Advertisement -
ফেস দ্যা পিপল লাইভ টক শো উইথ সাইফুর সাগর
Video thumbnail
ঘেরাও প্রতিবাদ, উত্তাল আদালত প্রাঙ্গন।জাতির পিতা বিতর্ক ও জাতীয় দিবসগুলো বাতিল প্রসঙ্গ।
00:00
Video thumbnail
দুর্ভাগ্য, না কি ব্যর্থতা? এখনও অ'প'রাধীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে! সমস্যাটা আসলে কোথায়? মনজুর আহমেদ চৌধুরী
08:01
Video thumbnail
আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাচন কাঠামো নিয়ে অবাক করা তথ্য দিলেন ড. সিনহা এম এ সাঈদ
15:16
Video thumbnail
আ. লীগ নেতা জা'মি'ন পায়, মাহমুদুর রহমান জে'লে ছিল কেন? কৃষকদল নেতার বি'ক্ষু'ব্ধ প্রতিক্রিয়া
09:41
Video thumbnail
চব্বিশের বি’প্ল’ব যে কারণে সফল হয়নি: রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে ক’ঠি’ন মন্তব্য দর্শকের
13:49
Video thumbnail
আ. লীগ যতদিন অ'বৈ'ধভাবে ক্ষমতায় ছিল ততদিন এদেরকে নি'ষি'দ্ধ করা দরকার: ভিপি ইব্রাহিম
12:58
Video thumbnail
ড. ইউনূস জনগণের কথা শোনেন না! ড. ইউনূসের যেসব ব্যর্থতার কথা জানালেন ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী
14:45
Video thumbnail
ড. ইউনূস প্রমাণ করছেন তিনি রাজনীতি বুঝেন না! এ কী বললেন ড. সিনহা এম এ সাঈদ?
14:15
Video thumbnail
আইন শৃঙ্খলা ও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা কি প্রমাণিত? কোন উপদেষ্টার কি উদ্দেশ্য?
01:30:27
Video thumbnail
পুলিশের সাথে কল রেকর্ড ফাঁ*স! এবার নিজের অবস্থান জানালেন সেই নেতা শেখ রেজওয়ান!
06:33

সর্বশেষ

আমাদের সাথে সংযুক্ত হোন

1,600,000FansLike
428FollowersFollow
1,270,000SubscribersSubscribe