বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারের দুর্বলতা হচ্ছে তারা নির্বাচিত সরকার নয়। জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা করতে হয় না। তারা জনগণ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, সকল দলের অংশগ্রহণে যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তবে আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। এটাই বাস্তবতা। এ কারণেই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের মাধ্যমে মামলা মোকদ্দমা দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়ে ক্ষমতায় আবার ফিরে আসতে চায়।
আজ সোমবার (১০ এপ্রিল) রাজধানী পশ্চিম রামপুরা ডেলটা হেলথ কেয়ারে নাটোর সদর উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন বেপারীকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। গত শনিবার যুগপৎ অবস্থান কর্মসূচিতে আওয়ামী নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হন এই নেতা।
মির্জা ফখরুল বলেন, নাটোরে অবস্থান কর্মসূচি পালনে আমাদের নেতাকর্মীরা যখন আসছে। তখন আওয়ামী যুবলীগ ছাত্রলীগ পুলিশের ছত্রছায়ায় আক্রমণ করে। সেখানে নাটোর সদর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের ওপর আক্রমণ করে। তাকে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। তার শরীরের রগগুলো কেটে যায়, তার হাত-পা ভেঙে দেয় নৃশংসভাবে। যদি ওখানে পুলিশ না রক্ষা করত তবে তিনি মারা যেতেন। তাদের লক্ষ্যই হয়েছিল তাকে হত্যা করা। এভাবে নাটোরে পরপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম তারা করছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আগেও আপনারা দেখেছেন সাবেক মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ তার নেতাকর্মীদের উপর কিভাবে অতর্কিত হামলা করেছিল সন্ত্রাসীরা। এভাবে তারা একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব নাটোরে করছে। শুধু নাটোরই নয়, সারাদেশে একটা ত্রাসের রাজত্ব করছে। তারা গত শনিবার আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মূলত একটি সন্ত্রাসী দল। এই সরকার সম্পূর্ণভাবে একটি সন্ত্রাসী সরকার গড়ে তুলেছে। জনগণ একটা আন্দোলন মধ্য দিয়েই তাদের পতন ঘটাবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সমস্যা হচ্ছে আমাদের যারা মন্ত্রী আছেন, তারা মুখে একটা বলেন কিন্তু কাজে করেন উল্টা। তারা মুখে বলবেন গণতন্ত্রের কথা। মুখে বলবেন তারা ছাড় দিচ্ছেন। এখানে ছাড় দেয়ার কি আছে? এটা আমাদের অধিকার। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আমি যখন আমার সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে যাব। তখন তারা হত্যা নির্যাতন করবে। এটা কখনো দেশের মানুষ মেনে নেয়নি, মেনে নেবে না। দেশের জনগণ কখনো সন্ত্রাস মেনে নেয়নি। গণতন্ত্রহীনতাকে মেনে নেয়নি। অন্যায়কে মেনে নেয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমরা স্পষ্ট পরিস্কারভাবে বলেছি তারা যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান না নিয়ে আসে। পদত্যাগ না করে, তবে এই দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অংশগ্রহণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এবার জনগণ ফাঁদে পা দেবে না। বিএনপিও কোনো ফাঁদে পা দেবে না। আমাদের দাবি একটাই, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না।
ডয়েচে ভেলে সাক্ষাৎকার দেয়া নাফিস আলমকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নেওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এ থেকে প্রমাণিত হয় র্যাব অসংবিধানিক ঘটনার সাথে জড়িত। সে কথা বলছে, এখন তার মুখ বন্ধ করতে চাচ্ছে। এবং শুধু র্যাব নয়, এর মূলত দায় সরকারের। র্যাব একটি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান। র্যাবকে সরকার আজ্ঞাবহ হিসেবে ব্যবহার করছে। মূলত সব দায় বর্তায় সরকারের ওপরে।
এ সময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাক্তার আব্দুল কদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।