বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গণবিরোধী ও অবৈধ সরকার।তাদের কাজ দেখলে মনে হয় বর্গিদের দল। বর্গিদের ভয় দেখিয়ে মা বাচ্চাকে ঘুম পাড়াত। বর্গিরা এসে লুট করত। আওয়ামী লীগের অবস্থা তা-ই। যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই বর্গির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে; লুট করে, মানুষের পকেট কাটে।
শুক্রবার(২৮ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল– বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ এখন কঠিন অবস্থায় পড়েছে। তারা রিজার্ভ নিয়ে বড় বড় কথা বলত। সেই রিজার্ভ কোথায় গেল? রিজার্ভ তারা চিবিয়ে নয়, গিলে খেয়েছে। গোটা দেশের অর্থনীতিকেই তারা গিলে খেয়ে ফেলেছে। আমদানির মূল্য শোধ হয় রিজার্ভ থেকে, ঋণের টাকা শোধ হয় রিজার্ভ থেকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পায়রা বন্দরে খরচ হয়েছে। জানতে চাই, কীভাবে খরচ হলো? হিসাব দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ তুলেছেন, বিএনপির সমাবেশের খবর বেশি করে প্রচার পাওয়া গণমাধ্যমের ওপর সরকার খবরদারি করছে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন পরে, তার আগে এ সরকারকে বিদায় করতে হবে। এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। যতক্ষণ তা না হচ্ছে, দেশের মানুষকে ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে লড়াই করতে হবে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমরা দেখছি, যা ছিলাম তার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কথাও বলতে পারছি না। আমাদের সভা করতে দেওয়া হয় না, সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না। করতে গেলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আঘাত করে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে নির্যাতন করা হয়। জ্বালানি তেল ও দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির এ সমাবেশ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই আন্দোলনে মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে, আহত করেছে।’
এ সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন বই পড়লে মনে হয়, দেশ স্বাধীন করেছে এক ব্যক্তি ও এক দল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ করেছে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সৈনিকেরা, ছাত্ররা ও সাধারণ মানুষ। কিন্তু ইতিহাসে তাঁদের নাম নেই। বিএনপি জেগে উঠেছে। সাহসী তরুণদের পদভারে গ্রাম-শহর প্রকম্পিত হচ্ছে। আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই, আগামী বছর জনগণের ভোটে বিএনপি আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে।
এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক, বজলুর রহমান, দলের যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ প্রমুখ।