পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বহরমপুর আদালতে আত্মসমার্পণ করে জামিন পেয়েছেন ফোকসম্রাজ্ঞী ও মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। এর আগে টাকা নিয়েও অনুষ্ঠান না করা, বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বহরমপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অলকেশ দাস তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এ দিন আদালতে মমতাজের আইনজীবী দেবাংশু সেনগুপ্ত বিচারকের উদ্দেশ্যে জানান, গত ৯ আগস্ট শুনানির দিন মমতাজ ঠিক কী কারণে বহরমপুর আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি! বক্তব্যে সন্তোষ প্রকাশ করে বিচারক মমতাজের বিরুদ্ধে জারি থাকা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা খারিজ করেন এবং তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে মামলার অভিযোগ গঠনের পরেও মূল আসামি এভাবে জামিন পেয়ে যাওয়ার বিষয়টির বিরোধিতা করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। যদিও বিচারক এই আপত্তি আমলে না নিয়ে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন।
মমতাজের আইনজীবীর পক্ষ থেকে এদিন পৃথকভাবে সিআরপিসি (ফৌজদারি) ২০৫ ভারতীয় আইন অনুযায়ী আদালতে একটি আবেদন দাখিল করেন। আবেদনটি আদালত মঞ্জুর করলে ভারতীয় আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে না মমতাজকে। তবে আদালতের নির্দেশ থাকলে অবশ্যই স্বশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে তাকে।
গত ৯ আগস্ট মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল মমতাজের। গত ৮ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মমতাজের মামলার চার্জ গঠন করা হবে। সেই দিন মমতাজ উপস্থিত না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে।
ওই সময়ে আদালতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না মর্মে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে একটি আবেদনপত্র আদালতে দাখিল করেন মমতাজ। মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে ২০০৮ সালে শক্তিশঙ্কর বাগচি নামে এক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অর্গানাইজার মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
শক্তিশঙ্কর বাগচি অভিযোগ করে বলেন, মুর্শিদাবাদে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের জন্য মমতাজ বেগমের সঙ্গে তার লিখিত চুক্তি হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক শক্তিশঙ্করের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মমতাজ নিয়মিত অংশ নিতেন।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ১৪ লাখ টাকায় মুর্শিদাবাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল শিল্পীর। তিনি অগ্রিম টাকাও নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি মমতাজ। এর পরেই শক্তিশঙ্কর চুক্তিভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মমতাজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার ভিত্তিতে আদালত পরবর্তী সময়ে সমন জারি করে।
যদিও কয়েকদিন আগে, প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করেন মমতাজ। সামাজিক মাধ্যমে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা করা হয়েছে।