প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের পাশে ছিলেন, তাদের কখনো আমরা ভুলতে পারি না; তাদের অবদান আমরা ভুলতে পারি না। আমরা কখনো আমাদের দুঃসময়ের বন্ধুদের ভুলি না।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে টোকিওর জাপানের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন আকাসাকা প্যালেলে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা চার জাপানি নাগরিককে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশই বোধ হয় একমাত্র দেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা আমাদের পাশে ছিলেন, যারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন, আমি সরকারে আসার পর থেকে তাদের খোঁজ করেছি, খুঁজে বের করেছি এবং আমাদের সাধ্যমতো সবাইকে আমরা সম্মান করার চেষ্টা করেছি, সম্মান দিয়েছি।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা ব্যক্তিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি, আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি অনেক রক্তের বিনিময়ে। কিন্তু আমাদের পাশে থেকে যারা সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
সম্মাননা প্রাপ্ত চার জাপানি নাগরিকের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ আরও চার জন মহান বন্ধুকে সম্মান জানিয়েছে, যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা আমাদের অসহায় মানুষদের জন্য মানবিক ত্রাণ, চিকিৎসা সুবিধা পাঠিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় ইতোপূর্বে সম্মাননা পাওয়া আট জন জাপানি নাগরিকের কথাও স্মরণ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের ওই সংকটময় মুহূর্তে জাপানি বন্ধুরা আমাদের দুর্দশা বুঝতে পেরেছিল এবং মানবতার জন্য এগিয়ে গিয়েছিলেন। এজন্য তারা (জাপানিরা) অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন কিন্তু পিছিয়ে পড়েননি। তাদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আমাদের আত্মাকে পুনরুজ্জীবিত করেছিল। সবচেয়ে অবিস্মরণীয় ছিল জাপানি স্কুলের বাচ্চাদের কথা, যারা আমাদের সাহায্য করার জন্য তাদের টিফিনের অর্থ সঞ্চয় এবং দান করেছিল।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব অটুট থাকুক। আমরা শুধু আমাদের বন্ধুদের সম্মান করি না, জাপানের সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধনও উদযাপন করি।
জাপানের সঙ্গে গত ৫০ বছর ধরে চলে আসা বন্ধুত্ব আগামী প্রজন্ম আরও এগিয়ে নেবে বলে প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত, জাপানের জনগণ অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আমাদের পাশে থাকবে। গত ৫০ বছর ধরে চলে আসা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্ব আগামী বছরগুলোতেও দুই দেশের নতুন প্রজন্ম সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।