ফরিদপুরের মধুখালীতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশিকুর রহমান চৌধুরীসহ ৮ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প করার জন্য নিশ্চিন্তপুর গ্রামে একটি জায়গা দেখা হয়। জায়গাটি বিএস রেকর্ডে সরকারি খাস জমি হলেও এসএ রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের বিরোধ ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকাবাসী ওই জমির মালিকানা নিজেদের দাবি করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছিলেন।
মানববন্ধনের খবর পেয়ে ইউএনও আনসার ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সেখানে যান। আনসার সদস্যরা এ সময় নারীদের কাছ থেকে মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। নারীদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। আনসার সদস্যরা রাইফেলের বাট দিয়ে কয়েকজন নারীকে আঘাত করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এরপরেই মাইকে ঘোষণা দেওয়ায় এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে এসে হামলা চালায়। এতে ইউএনও ও কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তখন ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ডুমাইন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ আসাদুজ্জামান তপন বলেন, ইউএনরও সাহেবের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করি।
সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর বলেন, পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। পরে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ঘটনাস্থলে আসেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করি গত দুই মাস যাবৎ। কিছু জমি এসএ রেকর্ডে ব্যক্তি মালিকানায় থাকলে ওই জমিগুলো বাদ দিয়ে সরকারি খাস জমিতে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। নির্মাণ কাজের জন্য সেখানে একটি ছোট ঘর তৈরি করা হয়। সে ঘরটি ভেঙে ফেলেছে শুনে আনসার ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ওই এলাকায় যাই। সেখানে গেলে তারা হামলা চালায় ও গাড়ি ভাঙচুর করে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ইউএনওর বাম চোখে আঘাত লেগেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।