তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষের তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি ও ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্ণারে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তাদের দাবি, গত শনিবার (১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে বাসের সিট ধরাকে কেন্দ্র করে আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সুমন গাজীকে মারধর ও লাঞ্চিত করেন আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রক্টর অফিসে বিচার দাবিতে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
তাদের অভিযোগ, এ হামলায় সরাসরি সম্পৃক্ত ও ইন্ধনদাতা হলেন, জাকারিয়া (বঙ্গবন্ধু হল), আমিনুর (জিয়া হল), হাসানুল বান্না (লালন হল)। এদের কেউ আল ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থী নন। এতে আইন বিভাগের কামরুজ্জামান, আহাদ, কবির, জুবায়ের, সোহানুর, নাইমুর, তালহা, বায়েজিতসহ আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ সময় প্রক্টর তাদের নিবৃত্ত করতে আসলে হামলার মাঝখানে পড়ে যান। সেখান থেকে আইনের শিক্ষার্থীরা প্রক্টর স্যারকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসেন বলেও জানান তারা।
হামলার নিন্দা জানিয়ে তারা বলেন, প্রক্টর ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে যে বানোয়াট ও বিভ্রান্তমূলক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া আইন বিভাগের ইশমামকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে আমাদের ন্যায্য দাবিকে এক কুচক্রী মহল ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস, হল ও মেসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে দাবি তাদের।
এদিকে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা বানোয়াট বলে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। আজ ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টার্স ইউনিটির অফিস কার্যালয়ে পাল্টাযুক্তি সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন জাকারিয়া (বঙ্গবন্ধু হল), আমিরুল (জিয়া হল) ও হাসানুল বান্না (লালন হল)। তারা বলেন, গত পরশু দিন আইন বিভাগ ও আল ফিকহের মধ্যে বাসে সিট ধরাকে কেন্দ্র করে যে একটা সমস্যা হয়েছিল, সেই রেশ ধরে আমাদের নামে বিভিন্নভাবে অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন।
অনেকে আমাদের বিরুদ্ধে একটা প্রশ্ন উঠাচ্ছে, আমরা কেন সেখানে উপস্থিত ছিলাম। সেটার উত্তর হচ্ছে- আল হাদিস বিভাগের মুস্তাফিজ স্যার যেহেতু একটা সমস্যায় পড়েছিল সেজন্য এবং সিনিয়র শিক্ষার্থী হিসেবে সেখানে কী হচ্ছিল এবং কী ঘটতেছিল সেটা দেখার জন্য উপস্থিত ছিলাম। আমরা ব্যতীত সেখানে অনেক শিক্ষার্থীও ছিল। পাশাপাশি সমন্বয়করাও উপস্থিত ছিল। আমরা প্রথমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি, সেখানে যেন অপ্রীতিকর কোন ঘটনা না ঘটে। আমরা সেখানে উপস্থিত হওয়ার কারণে কিছু শিক্ষার্থীরা আমাদের উপর প্রশ্ন তুলেছে।
যখন প্রক্টর অফিসে মীমাংসা করার উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন অনুষদ ভবনের সামনে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীসহ আল ফিকাহ ও আইনের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছিলেন। অথচ আমি (জাকারিয়া) একটু পিছনে ছিলাম। যখন দুই গ্রুপ সংঘর্ষে বাঁধে, তখন আসা হয়। এক্ষেত্রে এতগুলো বাহিরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ইন্ধনদাতা হিসেবে কেন অভিযুক্ত করেছে? আমি মনে করি এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত ভাবে আমাদের ব্যক্তিত্বকে, সম্মানকে বা মান ক্ষুণ্ণ করার লক্ষে নাম দেয়া হয়েছে। আমরা চাই এর সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা ওঠে আসুক।
এ বিষয়ে হাসানুল বান্না বলেন, ঘটনার সম্পূর্ণ সুষ্ঠু তদন্ত হোক৷ ব্যক্তিগতভাবে মান ক্ষুণ্ণ করার অধিকার কেউ রাখে না। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রক্টর স্যারকে অবহিত করে রাখবো।
এ সময় আমিরুল (জিয়া হল) বলেন, অভিযোগ পত্রে আমিনুর রয়েছে। আদৌও আমার নাম কিনা সন্দিহান। যেহেতু এক সাংবাদিক আমার নাম্বারে কল দিয়েছিল তাই আসলাম। আমার মনে হয় আমার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ আসার কথা না।