কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুরুতর আহত হয়েছে ৩ জন। আহত তিনজনই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রেজা-ই-এলাহী সমর্থিত স্থানীয় যুবদল নেতা রনি, হত্যা মামলার আত্মস্বীকৃত খুনি বিপ্লব চন্দ্র দাস, সাবেক শিক্ষার্থী ইকবাল, স্বজন বরণ বিশ্বাসসহ ১২ থেকে ১৫ জন এই হামলা চালান।
জানা যায়, বুধবার (৮ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আল আমিনের দোকানের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত হন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালমান হৃদয়, বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম রোহান।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি রাত ১০টায় রেজা-ই-এলাহী সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঢুকতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের বাঁধা দেয়। এই ঘটনার জেরে কুমিল্লা বিশ্বদিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের সাথে বাগবিতণ্ডা হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গতকাল ৭ মার্চ এনায়েত উল্লাহ এবং সালাম চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরদিনই হামলার শিকার হন শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালমান হৃদয়, বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম রোহান। হামলায় আহত বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম রোহানের হাত ভেঙে গেলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভুক্তভোগী সালমান চৌধুরী জানান, আমাকে বিপ্লব চন্দ্র দাস ডেকে নিয়ে যায় এবং প্রশাসন বহিষ্কার করলেও কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছি জানতে চেয়ে আমাকে এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহকে মারধর শুরু করেন।
এদিকে হামৱার ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ইন্ধন মন্তব্য করে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, খুনি বিপ্লব ও ছাত্রদলের লোকজন কিভাবে একজন হল ছাত্রলীগের সেক্রেটারিকে মারধর করে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইন্ধনে তারা আজ আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আধা ঘন্টার মধ্যে যদি এর সমাধান না আসে তাহলে আমরা প্রক্টরের পদত্যাগ চাই।
এ বিষয়ে কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক এস এম আতিকুউল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি উপাচার্য স্যারের সাথে কথা বলেছি। বহিরাগতরা যেহেতু আক্রমণ করেছে তাই আমরা তাদেরকে যতদ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তার করব।
প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এসব বিষয়ে আমার কোন ইন্ধন নেই। যারা এমনটি বলছে তারা এটিকে প্রমাণ করতে হবে। প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
এদিকে এই হামলার জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বলে জানা যায়।