পাবনার বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমিনপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বাবুর বিরুদ্ধে অসহায় এক নারী ও তার অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং পরবর্তীতে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দক্ষিণখান এলাকায় ভুক্তভোগীর মেয়ে আত্মহত্যা করে। উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ এনে দক্ষিণখান থানায় এ নারী অভিযোগ করলেও, পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী নারীর।
ভুক্তভোগী নারী জানান, স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় তিনি গত ১২ বছর যাবত দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার বসবাস করেন। তার পৈত্রিক নিবাস পাবনার সীথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর ইউনিয়নের চন্ডীপুর গ্রামে। নিজ এলাকার এক লোকের কাছে পাওনা টাকা তুলতে না পেরে বছর দুই আগে তিনি বাবুচেয়ারম্যানের সহযোগিতা চান। বিষয়টি শুনে টাকা তুলে দেয়ার আশ্বাসে বাবু কৌশলে এ নারীর সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং ঢাকার দক্ষিণখানের আনিসবাগ এলাকায় ভাড়াটে হিসেবে তুলে দেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী নারীর সাথেপ্রেমের সম্পর্ক গড়ে এ নারীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বাবু চেয়ারম্যান।
পরে, এই নারীর অজান্তে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে মায়ের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে ফুঁসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। পরে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নানা উপহার প্রদান ও অশ্লীল ছবি আদান প্রদান করতে থাকেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে, কিশোরী মনের প্রভাবে
বাবু চেয়ারম্যানের প্রলোভনে মায়ের নিষেধ উপেক্ষা করে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি কিছুদিন আগে নরসিংদি জেলায় মেয়ের বিয়ে ঠিক করলে বাবু চেয়ারম্যান মেয়েটিকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে সেই বিয়ে ভেঙে দেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি বাবু চেয়ারম্যানের সাথে আমার মেয়ের অশ্রীল ম্যাসেজিং ও ছবি আদান প্রদানের চ্যাটিং আমি ধরে ফেলি। তখন আমার মেয়ের সাথে কথা কাটাকাটি হলে সে বাবুকেই বিয়ে করবে বলে জানায়। নিরুপায় হয়ে আমিও তাতে মত দেই। কিন্তু সুচতুর বাবু চেয়ারম্যানকে মেয়ে বিয়ের কথা বললে সে তাল বাহানা শুরু করে।
আমার মেয়ে মন খারাপ করে থাকলেও এ বিষয়ে কিছু বলেনি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর আমি তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে খুব শীঘ্রই আজ কালের মধ্যেই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তুমিও যুক্তি পাবে, বাবুও ঝামেলামুক্ত হবে। কিন্তু তখনো বুঝিনি মেয়ে এত বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
ঘটনার পর আমি পুলিশকে বার বার বলেছি এ হত্যাকান্ডের জন্য বাবু চেয়ারম্যান দায়ী। কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই রিজিয়া বিষয়টি আমলে না নিয়ে আমার মেয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে বাবু চেয়ারম্যানের সাথে সকল ছবি ও ম্যাসেজিং এর আলামত মুছে ফেলেন। পরে মোবাইল ফেরত দিলেও আমি এসব আলামত আর উদ্ধার করতে পারিনি। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলায় আমাকে পুলিশ নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
তবে, অনৈতিক সম্পর্ক ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ বাবু। তিনি বলেন, এ নারী রুস্তম নামে বেড়ার বসন্তপুর এলাকার একজনের কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য আমার কাছে এসেছিলো। পরে, জানতে পেরেছি_-তার চারিত্রিক সমস্যা আছে। আমার কাছ থেকে সুবিধা নিতে না পেরে নানা অপবাদ দেয়। তাদের পারিবারিক ঝামেলায়
মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। এর সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
মার্কেটে তোলা ছবি প্রসঙ্গে এই চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে এসব ছবি তৈরি করা সম্ভব।