উপজেলা নির্বাচন ঘিরে মাদারীপুরে চলছে অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগ। মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৩ দিন আগে চেয়ারম্যান প্রার্থী চাচা পাভেলুর রহমান শফিক খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী ভাতিজা মো. আসিবুর রহমান খান।
রোববার (৫ মে) দুপুরে মাদারীপুর শহরের নিজ বাসভবনে এই সংবাদ সম্মেলন করেন আনারস প্রতীকের এই প্রার্থী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিতভাবে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রভাব খাটাতে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজে লাগাচ্ছেন। এ জন্য ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ভোট কিনতে টাকা বিলাচ্ছে।
‘পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী শফিক খানের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। যা নির্বাচনী আরচণবিধি ভঙ্গের সামিল। তার কর্মীরা আমার কর্মীদের হুমকি দিয়ে অস্ত্র প্রদর্শন করছেন, বিভিন্ন স্থানে আমার পোস্টার ছিড়ে ফেলছে, আমার কর্মীদের মারধর করছে’, যোগ করেন তিনি।
এ ছাড়া পরাজয় জেনেই নির্বাচনের দিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান সন্ত্রাস সৃষ্টির পায়তারাও করছে বলে অভিযোগ করেন আসিবুর রহমান খান।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেন পাভেলুর রহমান শফিক খান। তার ভাষ্য, এই নির্বাচনকে ঘিরে শাজাহান খান এমপি তার ছেলে আসিবুর রহমান খানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, প্রশাসনের উপর চাপ প্রয়োগ, কালো টাকা ছড়ানোর কারণে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এমন কি নির্বাচন কমিশনের আইনে স্থানীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু সেই আইনও মানছেন না সংসদ সদস্য।
তিনি বলেন, এমন ১৫টি অভিযোগ তুলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ৮ মে হতে যাওয়া নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আহমেদ আলী জানান, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা নিবেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনও কাজ করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খানের বড় ছেলে মো. আসিবুর রহমান খান এবং শাজাহান খান এমপির চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক খান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিন্দন্দ্বীতা করছেন।
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
১৫ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ২৮৩ দশমিক ১৪ কিলোমিটার আয়তনের সদর উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ২২ হাজার ৪২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার, নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২১ জন। আর ৫ জন রয়েছে অন্যান্য ভোটার।